দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ জুন: পরিবর্তনের ঝড়েও জ্বলে উঠেছিল লাল সূর্য (দিবাকর)। ২০১১-সালে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের (বর্তমান, ঝাড়গ্রাম) বিনপুর বিধানসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন সিপিআইএম প্রার্থী দিবাকর হাঁসদা। দাপুটে এই বাম নেতা বর্তমানে আর বিধায়ক না থাকলেও, সিপিআইএম- এর ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। একই সঙ্গে তিনি কৃষক সভারও সদস্য। সেই বাম নেতা ও প্রাক্তন বিধায়কের-ই বেড জুটলো না মেদিনীপুর মেডিক্যালে! অভিযোগ, প্রায় ২৪ ঘন্টা হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে-বসেই স্যালাইন নিতে হয়েছে তাঁকে। তারপর, সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে এই খবর প্রচারিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি বেড পান। মঙ্গলবার তাঁর গল ব্লাডার অপারেশন বা অস্ত্রপচার হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। এই মুহূর্তে তিনি স্থিতিশীল আছেন।
জানা গেছে, গল ব্লাডার অপারেশনের জন্য রবিবার (২৬ জুন) বিকেলে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে পাঠানো হয় নতুন বিল্ডিং (IC Building)- এর মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। তবে, জোটেনি বেড। এরপর, ৫০ টাকা দিয়ে প্লাস্টিক কিনে এনে ওয়ার্ডের মেঝেতে শুয়ে-বসে কাটাতে হয় তাঁকে। আরও অসংখ্য রোগীকেও এভাবেই দিনের পর দিন কাটাতে হয়! তাই, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি সহ দিবাকর বাবু একটা পোস্ট করেন রবিবার রাতে। লেখেন, “এরই নাম উন্নয়ন?” নিমেষে তা ভাইরাল হয়। সোমবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম-ও খোঁজ খবর নেয়। অবশেষে, সোমবার সন্ধ্যার মধ্যেই তাঁকে বেডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তবে, তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন! একসময় দরিদ্র, অসহায়, পিছিয়ে পড়া মানু্ষজনদের সঠিক চিকিৎসা ও বেডের ব্যবস্থা করতে যে বিধায়ক তৎপর ছিলেন, তিনি এবারও তাঁদের কথা বললেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালেন, মেঝেতে যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্য গদি ও বিছানার চাদরের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের বিভিন্ন রুমে গদি মজুদ হয়ে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। আর, ওঁদের গাঁটের পয়সা খরচ করে প্লাস্টিক কিনতে হচ্ছে! কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সোমবার রাতে তিনি বেডে যান। মঙ্গলবার তাঁর অপারেশন হয়। আপাতত তাঁকে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এনিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, “অস্বীকার করার উপায় নেই যে, হাসপাতালে রোগীর চাপ প্রচুর। আর, ওনার বিষয়টি আমরা জানতাম না! জানা সম্ভবও নয়। তবে, যখনই জানতে পেরেছি, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”