দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ডিসেম্বর: এইচআইভি (HIV- Human Immune Virus) সংক্রমণের বিরাম নেই পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলায় এই মুহূর্তে সক্রিয় এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা হল ২৬৪৬ জন। এর মধ্যে, চলতি বছরের (২০২১) জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ১৪৪ জন। চলতি বছরে সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। তবে, বাকিরা সকলেই এডসের একমাত্র চিকিৎসা অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (Antiretroviral Therapy)’র মধ্যে আছেন বলে জানা গেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা জানিয়েছেন, “জেলার মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল ও ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে এই চিকিৎসা হয়।” তিনি এও জানিয়েছেন, “সারা বছর ধরেই এডস সচেতনতা মূলক শিবির অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব এডস দিবস’ উপলক্ষেও একটি সুসজ্জিত ট্যাবলো বের করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ ধরে তা বিভিন্ন ব্লকে পরিভ্রমণ করবে। এছাড়াও, প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সচেতনতা মূলক নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।”

thebengalpost.net
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের ট্যাবলোর সামনে মুখ স্বাস্থ্য আধিকারিক সহ উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা :

উল্লেখ্য যে, জেলায় ১৩১১ জন এইচআইভি আক্রান্ত ART (antiretroviral therapy) চিকিৎসা গ্রহণ করেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এবং ১৩৩৫ জন ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল থেকে। চলতি বছরে ১৪৪ জনের মধ্যে ঘাটাল মহকুমার আক্রান্ত ৩৫ ও মেদিনীপুর-খড়্গপুর মিলিয়ে ১০৯। জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, “জেলার মধ্যে যে সমস্ত এলাকার যুবক-যুবতীরা কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে চলে যান এবং কয়েক বছর পর ফিরে আসেন, সেখানেই এডসের প্রাদুর্ভাব বেশি। যেমন, সোনা ও জরির কাজের জন্য ঘাটাল ও দাসপুর থেকে অনেকেই দিল্লি-মুম্বাই চলে যান, তারা ফিরে আসে এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ে। তাই, এই সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও, বারবার সচেতনতা মূলক বার্তা দেওয়ার পর, এখন অনেকটাই এর প্রকোপ কমেছে।” জেলার মধ্যে খড়্গপুরেও এডসের প্রকোপ বেশি বলে জানা গেছে। তবে, চিন্তার এটাই গৃহবধূ, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে কিশোর-কিশোরীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন! জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা জানিয়েছেন, “সবথেকে বড় সমস্যা হল, সামাজিক চাপে ‌ অনেকেই একে লুকিয়ে ফেলতে চান। উপসর্গ দেখা দিলেও চিকিৎসার মধ্যে আসতে চান না! সমাজ থেকে এই বিভেদ দূর করা দরকার। তবে, এখন অনেক বেশি শিবির হয় বলে সংক্রমিতদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। আশার কথা হলো, জেলার সকল এইডস আক্রান্তই এআরটি থেরাপির মধ্যে আছেন।” তবে, মৃত্যুও যে মাঝেমধ্যেই হচ্ছে তা মানছেন তিনি। চলতি বছরেই ৯ কিংবা তার থেকেও বেশি জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর গুলির পক্ষ থেকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে জেলার চিকিৎসক, প্রাক্তন স্বাস্থ্য আধিকারিক ও সমাজকর্মীরা একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সচেতনতার বার্তা দিয়েছেন।

thebengalpost.net
শালবনী ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সচেতনতা শিবিরে :