দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ সেপ্টেম্বর: চলতি মরশুমে পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৪ জনের। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই চার জনেরই মৃত্যু হয়েছে চলতি মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসেই। যথাক্রমে গত ২ সেপ্টেম্বর ও ১৫ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর শহরের দুই বাসিন্দার (বছর ৭৩’র ঊষা রানি দাস এবং বছর ২৭’র তীর্থঙ্কর বেরা-র) মৃত্যু হয়। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মাঝবয়সী ১ মহিলার মৃত্যু হয়। এরপর, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে (ঘড়ির কাঁটা অনুযায়ী শুক্রবার রাত্রি ১টা ৫ মিনিটে) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও এক গৃহবধূর মৃত্যু হল! বছর ৩৭’র ওই গৃহবধূ খড়গপুরের ৮নং ওয়ার্ডের খরিদা সংলগ্ন বাঙালিপাড়া (মিলন মন্দিরের সামনে)-র বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গেছে। মৃতার নাম রুনিতা মল্লিক। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডক্টর সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী।
জানা যায়, গত ৮-১০দিন ধরে জ্বর ভুগছিলেন তিনি। সোমবার তাঁকে খড়্গপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে, বৃহস্পতিবারই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি! ডেঙ্গু সক সিনড্রোমের কারণে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, মহিলা সুগার বা ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন। চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়ার ক্ষেত্রে যা অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, ঘটনা ঘিরে জেলায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এদিকে, চলতি মরসুমে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজার (৯৩৫) ছুঁয়েছে। এর মধ্যে, সর্বাধিক আক্রান্ত মেদিনীপুর শহরে- ১২৭ জন। নারায়ণগড়, দাঁতন (২), শালবনী ও খড়্গপুর শহরে যথাক্রমে- ৯০, ৮৫, ৮৪ ও ৭৩। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই যেন ভয়াবহ হয়ে উঠছে! প্রতিটি বাড়িতেই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে আলাদা করে ডেঙ্গু ওয়ার্ড (Dengue Ward) তৈরি করা হয়েছে। তবে, জেলার প্রতিটি হাসপাতালকেই অকারণে রেফার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বার্তা দিয়েছেন, জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করানোর জন্য। একইসঙ্গে, ডেঙ্গু ধরা পড়লে অবশ্যই হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জ্বর কমে যাওয়ার পরও ৭২ থেকে ৯৬ ঘন্টা সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী বলে জানিয়েছেন CMOH ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী সহ জেলার সকল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য আধিকারিকরাই।