দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিল:”উপগ্রহ চিত্র মারফৎ জানা গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর , ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান- এর বিস্তীর্ণ এলাকায় মাটির তলার জল অনেক নীচে নেমে যাচ্ছে। এর ফলে, এসব এলাকায় চাষের কাজের জন্য মাটির উপরের জল ও বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” মঙ্গলবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরের সার্কিট হাউসে দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক শেষে, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই আশঙ্কার খবর শোনালেন জলসম্পদ ও ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। তিনি এও বলেন, জঙ্গলমহল তথা রাঢ়বঙ্গের এই সমস্ত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় জল সংরক্ষণের জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপর জোর দিচ্ছে তাঁর অধীন জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। এজন্য একটি মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডাঃ মানস রঞ্জন ভূঁইয়া।

thebengalpost.net
মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া বৈঠক শেষে:

ডাঃ ভূঁইয়া এদিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, কোন জেলার কোন কোন ব্লকের মাটির গভীরে জলের স্তর নেমে গেছে, কোথায় পুকুর খনন করতে হবে, কোথায় চেক ড্যাম করতে হবে, কোথায় নদী থেকে খাল কেটে সেই জল সঞ্চয় করে চাষের কাজে লাগানো হবে- সেসব ঠিক করবেন জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের কারিগরি ও প্রশাসনিক  আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গেও একই ভাবে ঝর্ণার জল, নদীর জল, চেক ড্যামের জল সংরক্ষণ করা হবে। মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে পঞ্চায়েত, উদ্যানপালন, পশুপালন, মৎস্য ও কৃষি দপ্তরকেও। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো, মূলত পাথুরে, কাঁকুরে, ল্যটারাইট এলাকায় ‘জলতীর্থ’, ‘মাটির সৃষ্টি’, ‘জলছত্র’, ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রভৃতি প্রকল্পগুলিকে আরো সুচারুভাবে বাস্তবায়িত করা। মানস বাবু জানান, “কৃষি জমিতে সেচ দেওয়া, জলের ব্যবস্থা করা, মাটির তলার জলস্তরের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার উপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়েছেন। কিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আরো ভালো কাজ করা যাবে এবং নানা প্রকল্পের রূপরেখা- এনিয়ে আজ (মঙ্গলবার) বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিভাগীয় আধিকারিকরা তাঁদের রিপোর্ট জমা দেবেন।”

thebengalpost.net
মানস রঞ্জন ভূঁইয়া :

মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া সাংবাদিক বৈঠকে এও সংযোজন করেন, মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ে ২০ হাজার একর জমিতে তাঁর দপ্তর সেচের ব্যবস্থা করায় সেখানে উদ্যান পালন বিভাগ ও কৃষি বিভাগ বহু গাছপালা করেছে। অপরদিকে, তিনি এও জানিয়েছেন, সারা রাজ্যে ৫৭.৩৭ লক্ষ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। এরমধ্যে ৮০ শতাংশ জমিতে সেচের ব্যবস্থা করেছে জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। গত এক বছরে সারা রাজ্যে ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার পুকুর খনন করা হয়েছে‌ বলেও জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী এদিন ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিক দের নিয়েও বৈঠক করেন। তিনি জানান , গত এক বছরে এই দপ্তরে ২৭ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে, ১৮ হাজার নিষ্পত্তি হয়েছে।