দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ ফেব্রুয়ারি: পাঁচ মাসের ব্যবধানে ফের পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর (২০২২) খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে এসেছিলেন মমতা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাধিপতি নির্বাচন সহ সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও নিয়োগপত্র বিতরণ উপলক্ষে সেবার ২ দিনের সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফের সরকারি পরিষেবা প্রদান সংক্রান্ত অনুষ্ঠান ও প্রশাসনিক সভায় যোগ দিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বা ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে জেলা সদর মেদিনীপুরে পৌঁছতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৬ তারিখ অর্থাৎ আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের ঐতিহ্যমণ্ডিত কলেজ কলেজিয়েট ময়দানে ওই সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সূত্রের খবর। মূলত ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির অধীন বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে তুলে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পড়ুয়াদের হাতে ‘সবুজ সাথী’র সাইকেলও তুলে দিতে পারেন তিনি। প্রশাসনিক কর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে রিভিউ মিটিংও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সভা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত।
উল্লেখ্য যে, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই (৪ ফেব্রুয়ারি) পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরে (কেশপুরে) রাজনৈতিক সভা করে গেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর, এবার সরকারি সভা করতে আসছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বাজেট পেশের পরই জেলা সফরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও, শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই সফরে যাবেন পুরুলিয়াও। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ১৬ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরের কর্মসূচি শেষে পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। তারপর, বাঁকুড়াও যেতে পারেন তিনি। হেলিকপ্টারে সফর করার সম্ভাবনা তাঁর। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের ঠিক ১ সপ্তাহ আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক বদলি ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা! পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানীকে বদলি করে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পদে আনা হচ্ছে দার্জিলিং জেলার এডিএম খুরশিদ আলি কাদরী’কে। এ নিয়েই বিভিন্ন মহল থেকে নানা মত উঠে এসেছে! অনেকেরই দাবি, বালি-মোরাম সহ নানা ‘বেআইনি কারবার’ বন্ধ করতে গিয়ে তাঁর অতি-কঠোরতা বিপদ ডেকে এনেছে! পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবের কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার, অন্য একটি মহলের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘উপযুক্ত’ জেলাশাসক হিসেবে তরুণ IAS অফিসার কাদরী-কে গড়ে নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই, তাঁর (মুখ্যমন্ত্রীর) সফরের ঠিক আগেই এই বদলির নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যা জেলাবাসীর কাছে কিছুটা অপ্রত্যাশিতও! শাসক ঘনিষ্ঠ একটি অংশ অবশ্য এও দাবি করেছে, আয়েষা রানী মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের আমলাদের তালিকায় ছিলেন এবং আছেন; তবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কাজ করতে তাঁর কিছু ‘সমস্যা’ হচ্ছিল বলেই তাঁকে সচিব পর্যায়ে বদলি করা হয়েছে! যদিও, সেই দাবি মানতে রাজি নন বিরোধীরা। তাঁদের মতে, প্রশাসনিক কাজকর্ম দক্ষ হাতে সামাল দিলেও, ‘রাজনীতির’ পঙ্কিলতা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে গিয়েই আস্থা হারিয়েছেন আয়েষা!