দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ মার্চ: মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে মেদিনীপুর শহরের কলেজ কলেজিয়েট মাঠে প্রশাসনিক সভা শেষেই সরাসরি নবান্নে উড়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই, সন্ধ্যা নাগাদ নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দেন, “আগামীকাল (বুধবার, ৬ মার্চ) সাধারণ মানুষের জ্ঞাতার্থে একটি বিশেষ ঘোষণা। সকাল ১০ টায়।” এজন্য তিনি নিজের (Mamata Banerjee) ফেসবুক পেজে নজর রাখার বার্তাও দিয়েছিলেন। এরপরই, আজ (৬ মার্চ), বুধবার যথারীতি মুখ্যমন্ত্রীর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে জানিয়ে দেওয়া হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে (অর্থাৎ আগামী মাস থেকে) রাজ্যের আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকাদের (ICDS Helper) মাসিক বেতন বৃদ্ধি হতে চলেছে। এও জানানো হয়েছে, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যথাক্রমে ৭৫০ টাকা এবং অঙ্গনওয়াড়ি হেল্পারদের ৫০০ টাকা মাসিক বেতন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এর ফলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের বেতন হবে যথাক্রমে- ৯ হাজার টাকা এবং ৬৫০০ টাকা।

thebengalpost.net
মঙ্গলবার মেদিনীপুরের সভায়:

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বলেন, “বাংলার মানুষের সুখ-দুঃখের খেয়াল রাখা, তাঁদের হিতার্থে দিবারাত্রি কাজ করে যাওয়ার জন্য – আমি এবং আমার জনদরদি মা-মাটি-মানুষের সরকার সদা সচেষ্ট…আমি আপনাদের পাশে সর্বদা আছি, থাকব।” উল্লেখ্য যে, এর আগে রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা বৃদ্ধির সাথে সাথেই সরকারি কর্মচারীদের ৪ শতাংশ ডিএ (DA) বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়। তাছাড়াও, সিভিক পুলিশ, গ্রিন পুলিশদেরও বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়। তবে, সেই সময় আশা, অঙ্গনওয়াড়িদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে ঘোষণা করা হয়নি। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর সহ জঙ্গলমহল সফরে বেরিয়েছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুর দিয়ে মঙ্গলবার তা শেষ হয়। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি লোকসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী আশা-অঙ্গনওয়াড়িদের ‘হৃদস্পন্দন’ কিছুটা অনুভব করতে পেরেছিলেন এই সফরে?

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের কলেজ কলেজিয়েট মাঠের সভাতেই লক্ষ্য করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুরুর আগে এবং বক্তব্য চলাকালীনও অনেক মহিলা উঠে চলে যাচ্ছেন! তাঁদের বসানোর জন্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। এও উল্লেখ্য যে, মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলবারের সভা জমিয়ে রেখেছিলেন শুধু কন্যাশ্রীর কচিকাঁচারাই! গানে, চিৎকারে তারা যেমন মুখ্যমন্ত্রীকে আপ্লুত করতে পেরেছিল; ঠিক তেমনই তাঁর প্রিয় ‘মা-বোনেদের’ উপস্থিতি ও উৎসাহে খানিক ভাটাও হয়তো তাঁকে বেদনাহত করছিল! বলাই বাহুল্য, এই মা-বোনেদের মধ্যে অনেকেই আশা কর্মী কিংবা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। যদিও এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রশাসনের পদস্থ কর্তা থেকে শাসকদলের নেতারাও। সভায় মহিলাদের উপস্থিতি আগের তুলনায় কম কেন? এই বিষয়ে বিধায়ক দীনেন রায় থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখের মন্তব্য, “এটা ছিল প্রশাসনিক সভা। সেখানে বিভিন্ন দপ্তরের কিছু কর্মী কিংবা নির্বাচিত কিছু প্রকল্পের উপভোগক্তারাই উপস্থিত হয়েছিলেন। আমাদের দলীয় সমর্থকদের এই প্রশাসনিক সভায় প্রবেশ করার উপায় ছিল না! আমাদের হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ সমর্থকেরা উপস্থিত হবেন ব্রিগেডের জনগর্জন সভায়। সেখানে মহিলাদের ঈর্ষনীয় উপস্থিতি আপনাদের ক্যামেরায় নিশ্চয়ই ধরা পড়বে! কাজেই এই সমস্ত গুজব রটাবেন না। বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুরোপুরি প্রশাসনিক।”

thebengalpost.net
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন মেদিনীপুর কলেজ কলেজিয়েট মাঠের সভায়: