তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ অক্টোবর: বৃষ্টি থামলেও ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি! বাড়ছে শিলাবতী নদীর জল। প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তলায় বিভিন্ন স্কুল-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে পৌর ও গ্রামীণ এলাকার একটা বড় অংশ। নিচু এলাকার রাস্তাঘাট জলের তলায়। নৌকো চড়ে চলছে পারাপার। ঘাটাল পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ড আড়গোডা এলাকায় রাজ্য সড়কে জল। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ঘাটালের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি নৌকো নামানোর দাবি স্থানীয়দের। আর, এর মধ্যেই এলাকাবাসীদের ক্ষোভ কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলকে ঘিরে। তাঁদের বক্তব্য, গত ৪০ বছরেও অধরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। শুধু ভোট এলেই নেতাদের মুখে শোনা যায় আশ্বাস বাণী! এদিকে, কেন্দ্র ও রাজ্য পরস্পরকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত। ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, “রাজ্য চায়না ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত হোক। তাই, সহযোগিতা করছেনা!” রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া বলেন, “বার বার দরবার করার সত্ত্বেও অর্থ বরাদ্দ করছে না কেন্দ্র!” আর, কেন্দ্র-রাজ্যের এই টানাপোড়নের মধ্যেই ফের একবার জলে ভাসতে হলো ঘাটালবাসীকে!

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন:

প্রসঙ্গত, ঘাটালের বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভোট এলেই রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দেয় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের। ভোট মিটে গেলে আর দেখা পাওয়া যায় না নেতাদের!” উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট (সিপিআইএম) সরকারের সেচ মন্ত্রী প্রভাস রায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের শিল্যানাস করেন। তারপর, ৪০ বছর কেটে গেলেও কার্যকরী হয়নি ঘাটার মাস্টার প্ল্যান। শুধুমাত্র ভোট এলেই শোনা যায়, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণে প্রতিশ্রুতি!

ষাটোর্ধ্ব শেফালী দাসের অভিযোগ, “আমি ছোটবেলা থেকেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান শুনে আসছি। আমার জীবিত জীবদ্দশায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কি জিনিস সেটা বোধহয় দেখতে পাবো না!” ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মাজি বলেন, “কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার জন্যই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন হচ্ছে না। বিজেপির নেতৃত্বরা ঘাটালে এসে ঢাকঢোল পিটিয়ে তো বলে গেলেন, টাকা বরাদ্দ হয়েছে মাস্টার প্ল্যানের জন্য। কোথায় গেল টাকা? সবটাই বিজেপির ভাওতা। এই দল থেকে যত এড়িয়ে থাকবেন ততই মানুষের মঙ্গল।” পাল্টা বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, “তৃণমূল সরকার শুধু কেন্দ্রের টাকার দিকে তাকিয়ে বসে আছে। অথচ, মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের শর্ত স্বরূপ রাজ্য সরকারকে আগে ঘাটালের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত নদী, খাল, ক্যানেলগুলি ড্রেজিং করতে হবে। লকগেটগুলি সংস্কার করতে হবে। কিন্তু, সেজন্য ১ টাকাও বরাদ্দ করেনি! শুধু ভোট কেনার জন্য ভাতা দিচ্ছে। আর, এভাবেই প্রতি বছর মানুষকে জলে ডুবতে হচ্ছে।”

thebengalpost.net
জলে ডুবে ঘাটাল: