তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জানুয়ারি: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের জন্য তৈরি করা খিচুড়িতে বিষাক্ত সাপ! সাপ সহ-ই রান্না করা হলো খিচুড়ি। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরের এই ঘটনা ঘিরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের ভুঁইয়াড়া ১৮০ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারে। অবশ্য এই ধরনের ঘটনার খবর পাওয়ার পরই দ্রুত প্রশাসনের তরফে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। জানাজানি হওয়ার আগেই, ওই খিচুড়ি খেয়ে ফেলা দুই ছাত্রকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়েই শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সমাজকল্যাণ) কেম্পা হোন্নাইয়া, মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। রবিবার সকালে জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই শিশু ওই খিচুড়ি খেয়ে নিয়েছে, অনুমান করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে, কোনো অসুবিধা হয়নি। তাদের ছেড়ে দেওয়াও হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে।” এদিকে, বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, আদৌও ওই খিচুড়ি রান্না করার আগে বা পরে সাপ পড়েছিল কিনা! বা, পড়লে, কখন, কিভাবে ওই সাপ পড়লো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

thebengalpost.net
ঘটনার পরই আইসিডিএস সেন্টারে অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া:

এদিকে, শনিবার এই ঘটনা ঘিরে সাময়িক ভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় ওই এলাকায়। শনিবার বিষয়টি নিয়ে বিডিও (BDO) অনির্বাণ সাউ জানিয়েছিলেন, “খিচুড়ির মধ্যে সাপ পাওয়া গেছে, খবর পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” জানা যায়, দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের ভুঁইয়াড়া আইসিডিএস সেন্টারে অন্যান্য দিনের মতো শনিবারও শিশু ও প্রসূতি সহ ৪৫ জনের জন্য রান্না হয়েছিল খিচুড়ি ও ডিম। সেই খাবার রান্না করার পর, শিশুরা টিফিন বক্সে ভরে বাড়িতে নিয়ে চলে যায়। এমনই এক শিশুর পরিবারে খাবার পৌঁছতেই, টিফিন বক্স খুলেই তাঁরা দেখেন, বিষাক্ত সাপের আস্ত একটি বাচ্চা খিচুড়ির মধ্যে! দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকায় তড়িঘড়ি খিচুড়ি খাওয়া বন্ধ করে দেয় সকলে। কিন্তু, খবর জানাজানি হওয়ার আগেই, দুই ছাত্র খিচুড়ি খেয়ে নেয়! তবে, স্থানীয়দের তৎপরতায় এবং প্রশাসনের উদ্যোগে, তাদের নিয়ে যাওয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে। কোনোরকম অসুস্থতা অনুভব না করলেও, ‘আগাম সতর্কতা’ হিসেবে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়। কিন্তু, কিভাবে আইসিডিএস কেন্দ্রের খাবারের মধ্য থেকে বের হল সাপ? এই নিয়ে এলাকায় দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। যদিও, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা বলেন, “কিভাবে ঘটলো আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। এতবড় সাপ, রান্নার সময় পড়লে তো বুঝতে পারতাম। রান্নার পর পড়লেও, ডাবুতে করে তোলার সময় তো বুঝতে পারতাম!” প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে গোটা বিষয়টি নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে রবিবার, বছরের প্রথম দিন জানা গেছে।