তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ ডিসেম্বর:কলেজের অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপাল)-কে তাঁর রুমে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের। ঘটনা ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি শুক্রবার দুপুরে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের। ৮ দফা দাবি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এদিনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি চলে। জি.বি মিটিংয়ে (গভর্নিং বডির মিটিংয়ে) তৃণমূল সাংসদ দেবের (দীপক অধিকারী) প্রতিনিধি রামপদ মান্নাকে ডাকা হয় কেন? ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা নিয়ে রক্তদান শিবির করা হয় কেন? কলেজ ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা লাগাতে দেওয়া হয়নি কেন? বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের ভাইপোকে বেআইনিভাবে অনার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে কেন? এরকমই সব অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভের জেরে প্রিন্সিপাল ড. মন্টু কুমার দাস দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকেন তাঁর রুমে। পাশাপাশি, কলেজের অপর আরেকটি গেট তথা গ্রিলে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এই গ্রিল খুলেই প্রিন্সিপালের রুমে যাওয়ার রাস্তা। জানা যায়, কলেজের একটি অনুষ্ঠানের জন্য দু’জন অধ্যাপক প্রিন্সিপালকে ডাকতে গিয়ে একজন ভেতরে প্রবেশ করে গেলেও, রাজেশ সরকার নামে অপর এক অধ্যাপক বাইরেই আটকে পড়েন। ওই অধ্যাপক ভেতরে ঢুকতে না পেরে গ্রিল ধরে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দেন! আর এতেই গ্রিলের অপরপ্রান্তে থাকা দু’জন বিক্ষোভকারী আহত হয়। অন্যান্য ছাত্ররা তাদের উদ্ধার করে কলেজের উল্টোদিকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। এমনই দাবি বিক্ষোভকারীদের। এরই মাঝে ঘটনার কথা শুনে কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করতে যান ঘাটাল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি দিলীপ মাজি। বিক্ষোভের ফলে বেশ কিছুক্ষণ দিলীপ মাজি আটকে পড়েছিলেন। শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের এই ঘেরাও বিক্ষোভকে ঘিরে রীতিমতো উত্তাল হয় কলেজ চত্বর।
অন্যদিকে, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই রামপদ মান্না জানিয়েছেন, তিনি সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবেই আসেন। রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে নয়। যদিও, গভর্নিং বডির সদস্য না হয়েও, সাংসদের ‘প্রতিনিধি’ কেন আসবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শাসকদলেরই ছাত্র সংগঠনের নেতারা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ঘাটাল কলেজের ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বরা এই মুহূর্তে রামপদ মান্না বিরোধী গোষ্ঠীর রাজনীতি করে। তাই, তৃণমূল কংগ্রেসেরই নেতা হলেও, রামপদ মান্না’র প্রতি তাদের বিরূপ মনোভাব! এনিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মন্টু কুমার দাস জানান, আসলে সাংসদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো বা সই করানোর বিষয়গুলি তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়। অন্যান্য অভিযোগগুলিও তিনি অস্বীকার করেন। অন্যদিকে, ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর ভাইপো নিজের যোগ্যতায় অনার্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তৃণমূল নেতাদের মতো দুর্নীতি করে তাঁর ভাইপো-কে সুযোগ দেওয়া হয়নি।