দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ জুন:‘যৌথ বন পরিচালনা’ বিষয়ক সভা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলা শহর মেদিনীপুরের প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে সোমবার এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন, বন দপ্তরের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ছিলেন, দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, MSME দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, রাজ্যের দুই মুখ্য বনপাল যথাক্রমে, সৌমিত্র দাশগুপ্ত ও দেবল রায় (বন্যপ্রাণী); জেলাশাসক আয়েশা রানী এ, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, বিধায়ক অজিত মাইতি, দীনেন রায়, উত্তরা সিংহ হাজরা, মমতা ভুঁইয়া, পরেশ মুর্মু, বন ও বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ সহ অন্যান্য কর্মাধ্যক্ষ এবং জনপ্রতিনিধিরা। সর্বোপরি ছিলেন, যৌথ বন পরিচালন (Joint Forest Management) কমিটির কয়েকশো সদস্য – সদস্যরা। মূলত, জঙ্গল রক্ষায় তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করে, আগামীদিনে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার বার্তা দিতেই এই সভা আয়োজিত হয়েছিল। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, “এবার থেকে জেলায় জেলায় এই সভা হবে। আপনাদের মুখ থেকে প্রথমে নানা সুবিধা-অসুবিধা ও আপনাদের প্রস্তাব শুনব। তারপর আমরা বলব।” সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, “সবুজ রক্ষায় বা জঙ্গল রক্ষায় সবথেকে বেশি অবদান আপনাদেরই। তাই, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গল থেকে হওয়া মোট আয়ের (আর্থিক লভ্যাংশের) ৪০ শতাংশ আপনাদের (যৌথ বন পরিচালন কমিটির) জন্য বরাদ্দ করেছেন। আগে তা ছিল ২৫ শতাংশ।” তবে, মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরাও নিজের মনের কথা জানালেন। একদিকে যেমন বর্তমান সরকারের প্রতি তাঁরা ধন্যবাদ জানিয়েছেন, অপরদিকে, বরাদ্দ হওয়া অর্থ না পাওয়া থেকে শুরু করে, বছর দুয়েক আগে হওয়া বন সহায়ক পদে ব্যাপক দুর্নীতির বিষয়টিও তুলে ধরেন।

thebengalpost.net
সভার উদ্বোধন:

যৌথ বন পরিচালন কমিটির এক সদস্য এদিন বলেন, “আমরা যাঁরা বছরের পর বছর ধরে জঙ্গল (বন ও বন্যপ্রাণী) রক্ষার কাজে লিপ্ত থাকি, এই চাকরিতে তাঁদের মধ্য থেকেই নিয়োগ করার কথা ছিল। কিন্তু, নেতা-মন্ত্রীরা সব নিজেদের মতো করে লোক ঢুকিয়েছেন।” সেই সময় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেও, পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দেখছেন। তদন্ত চলছে এ নিয়ে। আমি তখন এই দপ্তরে ছিলাম-ও না!” অপরদিকে, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্নভাবে জঙ্গল ও জঙ্গলরক্ষক-দের প্রতি আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন বলেও তাঁরা ধন্যবাদ প্রকাশ করেছেন। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান থেকে আসা এই সকল যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা বলেন, “জঙ্গল থাকলেই থাকবে জীবন। আমরা তা বুঝি। সেজন্য, আমরা যাঁরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ, তাঁরাও আজ শিকার বন্ধ করা নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। এই জঙ্গলকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।” একইসঙ্গে জঙ্গলে আগুন লেগে যাওয়া নিয়ে তাঁদের দাবি, “যদি জঙ্গলের মাঝে মাঝে বা আশেপাশে জলের ব্যবস্থা করা যায়, ভালো হয়।” মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দপ্তরের আধিকারিক ও জেলাশাসক আয়েশা রানী-কে বলেন, “আমরা ডিপ টিউবওয়েল করার খরচ দেব। এই বিষয়টা একটু দেখুন।” এদিন, তিনি পুনরায় গাছ কাটা নিয়ে কড়া বার্তা দেন। গড়বেতা ৩ নং ব্লকের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানান ডিএফও এবং ডিএম-এসপি’কে! সঙ্গে, রাজ্য সরকারের একাধিক পরিকল্পনা ও প্রকল্প বিষয়েও জানান বনমন্ত্রী।

thebengalpost.net
যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা :