দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ এপ্রিল:মেদিনীপুর শহর তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আজ (বৃহস্পতিবার) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল (বুধবার) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (১৭ এপ্রিল) ছিল ৪২.৯৯। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জেলার গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি। এই ‘আগুনে’ তাপমাত্রার মধ্যেই খেয়ালি মানুষের চরম উদাসীনতায় পুড়ে ছাই হয়ে গেল মেদিনীপুর বনবিভাগের অধীন ভাদুতলা রেঞ্জের প্রায় ১০০ হেক্টর ‘সবুজ’ বনভূমি! সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা অবধি দাউ দাউ করে জ্বলে ভাদুতলা রেঞ্জের বালিজুড়ি এপিসি-র প্রায় ১০০ হেক্টর বনভূমি। প্রায় ৪-৫ ঘন্টার চেষ্টায় দমকলের একটি ইঞ্জিন বিকেল নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, গত ১ এপ্রিলের পর ফের ভাদুতলা রেঞ্জে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় বনদপ্তর থেকে এলাকাবাসীরা চরম ক্ষুব্ধ! হতাশও। বনদপ্তরের প্রাথমিক অনুমান, জঙ্গলে আগুন লাগার প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই দায়ী সাধারণ মানুষের উদাসীনতা অথবা অসৎ উদ্দেশ্য। বনাঞ্চল আধিকারিকদের মতে, হয় কেউ বা কারা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে, কাঠচুরির মতো অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা করে অথবা নিছকই উল্লসিত (পৈশাচিক উল্লাস!) হওয়ার জন্য এই ধরনের কাজ করেন। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য দায়ী সাধারণ মানুষের উদাসীনতা বা অসচেতনতা! জঙ্গলের আশেপাশে বিড়ি বা সিগারেট খেয়ে তার পোড়া অংশ জঙ্গলের দিকে ছুঁড়ে ফেললেও শুষ্ক ও উত্তপ্ত আবহাওয়ায় দ্রুত আগুন লেগে যায়! এদিনের (বৃহস্পতিবারের) ঘটনাও তেমনভাবেই ঘটেছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
তাঁদের দাবি, দুই ব্যক্তি বাইক নিয়ে ৬০নং জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়; সকাল সাড়ে ১০টা-১১টার দিকে ভাদুতলার জঙ্গলের পাশে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য দাঁড়ান। এরপরই, তাঁদের মধ্যে একজন বিড়ি বা সিগারেট খেয়ে পোড়া অংশটি জঙ্গলের দিকে ছুঁড়ে ফেলার পরই আগুন লাগে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি! প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। বনদপ্তরের কর্মীরাও দ্রুত পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় দমকলেও। দ্রুত দমকলের একটি ইঞ্জিন পৌঁছে আগুন নেভানোর ‘যুদ্ধে’ নেমে পড়ে। বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৩-৪ ঘন্টা ধরে টানা লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর, বিকেল ৪টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা যা। তবে, তখনও পুরোপুরি ‘আগুন’ নেভানো সম্ভব হয়নি। এদিকে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০০ হেক্টর ‘সবুজ’ বনভূমি ‘ধূসর’ হয়ে গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি! উল্লেখ্য যে, স্থানীয়দের দাবি মেনে দুই বাইক আরহীকে আটক করে, জিজ্ঞাসাবাদ (সন্ধ্যা পর্যন্ত) করা হচ্ছে বলে বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে।