দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর: প্রায় ১৩ বছর পর এমন ভয়াবহ বন্যা দেখল খড়্গপুর মহকুমা! সবংয়ের বিধায়ক তথা জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া এবং নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট দু’জনই এক বাক্যে স্বীকার করলেন ২০০৮ সালের পর এতবড় বন্যা দেখেনি পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর মহকুমার অন্তর্গত নারায়গগড়-সবং-ডেবরা-পিংলা। কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-এগরা-ময়না-পাঁশকুড়া প্রভৃতি এলাকাও। জানিয়েছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও, এখনও জলের তলায় এইসব এলাকা। মাঠ-ঘাট মিশে গিয়েছে নদীর সাথে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের অবস্থা ভয়াবহ! কেলেঘাই নদীর জল বয়ে গিয়েছে এই এলাকার উপর দিয়ে। প্লাবিত জমিজমা, ঘরবাড়ি বাজারহাট, রাস্তাঘাট সবকিছুই! ভেঙে পড়েছে কয়েক হাজার মাটির বাড়ি। আশ্রয়হীন হাজার হাজার মানুষ। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে নারায়ণগড় ব্লকের বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখলেন সিভিল ডিফেন্সের ডি আই জি মিতিল জৈন। সাথে ছিলেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল, অতিরিক্ত জেলা শাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকার, অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) তুষার সিংলা, মহকুমাশাসক (খড়গপুর) আজমল হোসেন, বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট, বিডিও শুভম আগরওয়াল প্রমুখ।

thebengalpost.net
পরিদর্শনে জেলাশাসক সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা :

thebengalpost.net
জেলাশাসক ও মহকুমাশাসক :

এন ডি আর এফের তিনটি স্পিড বোর্ডে করে এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। প্রায় ৪ কিমি রাস্তা স্পিড বোর্ডে করে গিয়ে তাঁরা পৌঁছন মান্দার গ্রামে। সেখানে এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ত্রাণসামগ্রী তুলে দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট বলেন, “২০০৮ সালের পর এরকম ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে মাটির বাড়ি। ত্রাণ শিবিরে আনা হয়েছে মানুষদের।” নারায়ণগড়ে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত অহল্যা সাই এর পরিবারের হাতে একটি চেক তুলে দেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। এদিকে, বুধবার সন্ধ্যার পর জেলায় আরো দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। কেশপুর ব্লকের ডুকি গ্রামের নাবালক সনাতন সরেন (৮) এবং খড়গপুর গ্রামীণের প্রতাপপুর গ্রামের সেক ফিরোজ (৪১) এর জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। নারায়ণগড় ছাড়াও সবং, পিংলা, ডেবরা, কেশপুর, মেদিনীপুর সদর ব্লক থেকে শুরু করে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে এখনও। জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল বলেন, “জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক ও পুরসভায় জল জমে রয়েছে। ডেবরা থানা এবং বিডিও অফিসেও জল ঢুকে গিয়েছে। জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। তাঁদের সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে। বন্যা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা চলছে। এন ডি আর এফের (NDRF) দল রয়েছে। আরো একটি দল এসে পৌঁছবে।” প্রসঙ্গত, এই বছরের প্রথম বন্যায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঘাটাল মহকুমা,‌‌ গত ২৯-৩০ জুলাইয়ের বন্যায় ঘাটাল মহকুমা ছাড়াও মেদিনীপুর সদর ব্লক বিধ্বস্ত হয়েছিল। আর, এবার মাত্র ২৫-৩০ ঘন্টার বাঁধভাঙা বৃষ্টিতে প্লাবিত সারা জেলা! তবে, এবার সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত খড়্গপুর মহকুমা, জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।

thebengalpost.net
ত্রাণসামগ্রী তুলে দিলেন জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল সহ বিধায়ক ও আধিকারিকরা :