শেখ ওয়ারেশ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ ফেব্রুয়ারি: মহান সুফি-সাধক হযরত সৈয়দ মুরশেদ আলী আলকাদেরী আল বাগদাদী যিনি “মওলা পাক” নামে খ্যাত। তাঁর ১২১ তম বার্ষিক উরস উৎসব বৃহস্পতিবার উদযাপিত হল, কোভিড বিধিনিষেধ মেনে। এই উপলক্ষে, মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদ ‘মওলপাকের’ মাজার শরীফে, তাঁর বাসস্থান দায়রাপাকে ও সাধনা স্থল কাঁসাই নদীর তীরে অবস্থিত স্ত্রীগঞ্জ পাকে ভক্ত ও পূর্ণার্থীদের ঢল নেমেছে বুধবার থেকেই। তবে, অতিমারীর কারণে এবারও মেদিনীপুরের পবিত্র মাটি স্পর্শ করেনি বাংলাদেশ থেকে আসা পূণ্যার্থীদের বিশেষ ট্রেন! তাই, মেদিনীপুরবাসী তথা এপার বাংলায় যেমন মন খারাপ, ঠিক তেমনই মন খারাপ ওপার বাংলাতেও। প্রসঙ্গত, ‘মওলাপাক’ কাদেরিয়া তরিকার প্রাণপুরুষ বড় পীর সাহেব গওসুল আজম হযরত সৈয়দ শাহ আব্দুল কাদের জিলানীর ২৩ তম বংশধর। বর্তমানে, এই তরিকার সাজ্জাদানশীন মাওলা পাকের স্থলাভিষিক্ত হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসুব আলী আল কাদেরী আল বাগদাদী পাকের পরিচালনায় ও তত্ত্বাবধানে এবার এই উরস উৎসব উদযাপন করা হয়। আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে এই বংশের মহান পুরুষ হযরত সৈয়দ শাহ আব্দুল্লাহ আল জিলানী আল বাগদাদি বাগদাদ শরীফ থেকে হিন্দুস্থানে তশরীফ আনেন। জলপথে উড়িষ্যার চাঁদবালি বন্দর হয়ে তাঁরা বর্ধমানের মঙ্গলকোটে পৌঁছান। কিছুদিন সেখানে অবস্থান করার পরে তিনি ফিরে গেলেও দুই পুত্রকে রেখে যান। ‘গওসে সানি পাক’ মঙ্গলকোটে থেকে যান। অপরজন ‘কুতবে বারি পাক’ বিহারের পূর্ণিয়া জেলার হযরত রওশনগঞ্জে চলে যান। সেখানেই তার মাজার পাক রয়েছে। এই দুটি স্থানই ভারতে কাদেরিয়া তরিকার অন্যতম পীঠস্থান। মাওলা পাকের পিতা মহান সুফি সাধক আল হুজুর পাকের আমল থেকেই মেদিনীপুর তাঁদের সাধনা স্থল হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, মাওলা পাক ১৮৫২ সালের ১৬ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালেই তিনি আরবি-ফারসি উর্দু প্রভৃতি ভাষা এবং কুরআন-হাদিস ও ধর্মীয় শাস্ত্রে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। মহান পিতার তত্ত্বাবধানে তাঁর শিক্ষা ও সাধনা চলে। মেদিনীপুরের স্ত্রীগঞ্জের জঙ্গলে ও গোপ পাহাড়ে তিনি কঠোর তপস্যা করেন। তাঁর সাধন স্থলগুলি আজও ভক্তদের আকর্ষণ করে। মাওলা পাক সেই জমানার শ্রেষ্ঠ আলেম হিসেবে পরিগণিত হন। তিনি বহু স্থান ভ্রমণ করেন এবং সমকালের আউলিয়া কেরাম তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেন। তাঁর সান্নিধ্য লাভের আশায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তরঙ্গের মতো ছুটে আসতো। সাধারণ মানুষকে আধ্যাত্মিক জগতের নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একাধিক পুস্তকও রচনা করেন তিনি। যে গুলির মধ্যে অন্যতম হলো ফার্সি সমৃদ্ধ উর্দু কাব্যগ্রন্থ “দেওয়ান পাক”, সুফি রহস্য আধ্যাত্মিক তত্ত্ব এবং ঈশ্বর প্রেমের মূল্যবান আকার। তাঁর পিতা “আল্লাহ হুজুর” পাকের জীবনী নিয়ে তাঁর লেখা “তোগরা এ মাহামেদ” ফারসি ভাষায় রচিত একটি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ। এপার বাংলা ওপার বাংলা সহ এশিয়া মহাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা।
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানুষ যোগদান করে থাকেন এই উৎসবে। কিন্তু, ২০২১ সাল থেকে করোনা অতিমারীর কারণে বাংলাদেশের স্পেশাল ট্রেন ও রিজার্ভ বাস কিছুই আসতে পারছেনা। তাই, ভক্তদের এবং এলাকাবাসীর মন খারাপ। তবে, এ বছর সরকারি নির্দেশ ও সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় উরস উৎসব পালিত হয়েছে। সকলের মনে একটাই আশা, আগামী বছর হয়তো এই সংকট কাটিয়ে উঠে ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরে ফের একবার জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মিলিত হবেন এপার বাংলা – ওপার বাংলার সাধারণ মানুষ!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…