দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ অক্টোবর: একদিকে দশমী-একাদশীতেও দুই শহরের মণ্ডপে মণ্ডপে উৎসবপ্রিয় জনতার ভিড়, অন্যদিকে আগামীকাল অর্থাৎ দ্বাদশীর (৭ অক্টোবর) দিন জেলার প্রথম পূজা কার্নিভাল ঘিরে উন্মাদনা! তিলোত্তমার বুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে গত কয়েক বছর ধরেই। তবে, বিসর্জনের শোভাযাত্রার পরিবর্তে জেলায় এই প্রথম অনুষ্ঠিত হবে পূজা কার্নিভাল। মুখ্যমন্ত্রী’র নির্দেশে পশ্চিম মেদিনীপুরের ‘জেলা শহর’ মেদিনীপুর এবং ‘রেল শহর’ খড়্গপুরেও আগামীকাল (৭ অক্টোবর) মহা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কার্নিভাল। শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ শহর মেদিনীপুর ও খড়্গপুরে এই দুর্গাপুজো কার্নিভালের উদ্বোধন হবে বলে জানা গেছে। মেদিনীপুর শহরের বটতলা চক থেকে গোলকুঁয়ার চকের রাস্তায় অনুষ্ঠিত হবে কার্নিভাল। ওই রাস্তা সেজে উঠছে আলোকসজ্জায়। প্রায় প্রস্তুত মঞ্চ। আগামীকাল থাকার কথা জেলাশাসক আয়েশা রানী, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার সহ জেলার মন্ত্রী ও বিধায়কদের। মেদিনীপুর শহরের মোট ১৮টি পুজো কমিটির যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে এই কার্নিভালে। তবে, আশা করা হয়েছিল অন্তত ৩০-৩৫টি কমিটি যোগ দেবে! উল্লেখযোগ্য ভাবে, শহরের অন্তত ১০টি বড় পুজো বা নামকরা পুজো কমিটিই নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে এই কার্নিভাল থেকে। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সেই সমস্ত কমিটিগুলোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নাকি শহরের তাবড় তৃণমূল নেতা, কাউন্সিলর-রা যুক্ত রয়েছেন!
সূত্রের খবর অনুযায়ী, মেদিনীপুর শহরের বিধাননগর, অরবিন্দ নগর, গোলকুঁয়াচক, বটতলা চক, পাটনা বাজার, সংযুক্তপল্লী, শরৎপল্লী সহ একাধিক পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশগ্রহণ করছে না! অন্যদিকে, রাজাবাজার, বিবিগঞ্জ, অশোক নগর, রাঙামাটি, রবীন্দ্রনগর, সমাজবাড়ি (নজরগঞ্জ) প্রভৃতি পুজো উদ্যোক্তাগুলি অংশগ্রহণ করতে চলছে এই কার্নিভালে। থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান জানিয়েছেন, “কার্নিভালকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পৌরসভার তরফ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।” অন্যদিকে, কার্নিভালকে কেন্দ্র করে খড়গপুর শহরেও উৎসাহ, উন্মাদনা তুঙ্গে! পৌরসভার সামনে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয় পর্যন্ত রেলের রাস্তা জুড়ে অনুষ্ঠিত হবে কার্নিভাল। অভিযাত্রী, তালবাগিচা সবুজ সংঘ, তালবাগিচা নেতাজি ব্যায়ামাগার, প্রেমবাজার, আদি পুজা কমিটি, বাবুলাইন সহ ১১টি কমিটি এই কার্নিভালে অংশগ্রহণ করতে চলেছে। মহি পরিচালিত একটি পুজো এবং আবাসনের একটি পুজোও এই তালিকায় আছে। জানা গেছে, পৌরসভার সামনে রাস্তায় লাগানো হবে ৬টি এলইডি টিভি। আগামীকাল (শুক্রবার) সাধারণ মানুষকে এই কার্নিভালে আহ্বান জানানোর সাথে সাথে, পৌরসভা সংলগ্ন তিনটি রাস্তা পথচারীদের এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পৌরপ্রধান প্রদীপ সরকার। উল্লেখ্য যে, প্রতিটি পুজা কমিটি শোভাযাত্রা সহকারে নিজেদের থিম বা বিষয়বস্তু নিয়ে আগামীকাল পারফরম্যান্স তুলে ধরবেন বিচারকদের সামনে। সময় পাবেন ৫ মিনিট। কোভিড অতিমারী, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব, ক্রীড়া, পরিবেশ প্রভৃতি একাধিক বৈচিত্র্যময় বিষয় তুলে ধরা হবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।