দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ ডিসেম্বর: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। আর, মেদিনীপুর বাসীর আঠারো! এমনটা বললেও বোধহয় অত্যুক্তি হয়না। আর, মেদিনীপুর বাসীর এই আঠারো পার্বণের অন্যতম অবশ্যই ‘চার্চের মেলা’! জেলা শহর মেদিনীপুরের নির্মল হৃদয় আশ্রম ও স্কুল সংলগ্ন মাঠে ২৫ ডিসেম্বর শুরু হয় মেলা এবং শেষ হয় ৩ জানুয়ারি। গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে যে সমস্ত বৃহৎ আকারের মেলা হয়, মেদিনীপুর শহরের চার্চের মেলা যে তার মধ্যে অন্যতম, তা বলাই বাহুল্য! করোনা আবহে বিগত দু’বছর অবশ্য মেলার আড়ম্বরে কিছু কাটছাঁট করা হয়েছিল। এবারও, চিনে করোনা চোখ রাঙাতে শুরু করেছে ঠিকই, তবে এদেশে এখনও ভয় বা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা এই মুহূর্তে করোনা মুক্ত। তাই, এবার দ্বিগুণ আনন্দ-উদ্বেলতার সঙ্গে, বড়দিন উপলক্ষে চার্চের মেলা’র উদ্বোধন হয়ে গেল রবিবার (২৫ ডিসেম্বর)। অন্যদিকে, বড়দিনের আনন্দ উদযাপন করতে গোপগড় ইকোপার্ক, কাঁসাই নদীর পাড়, বিদ্যাসাগর পার্ক, ক্ষুদিরাম পার্ক, শিশু উদ্যান সহ বিভিন্ন পিকনিক স্পটে চড়ুইভাতি বা বনভোজনে মেতে উঠেছিলেন কয়েক হাজার শহরবাসী তথা জেলাবাসী। আর, সন্ধ্যায় চার্চের মেলার উদ্বোধন ও আতসবাজির প্রদর্শন দেখতেও হাজির হয়েছিলেন অগণিত মানুষ।

thebengalpost.net
চার্চের মেলার উদ্বোধন:

রবিবার বিকেল ৫-টা নাগাদ চার্চের মেলার উদ্বোধন করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানী এ। উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী দত্ত, পৌরপ্রধান সৌমেন খান, বিশিষ্ট সমাজসেবী আব্দুল ওয়াহেদ, নির্মাল্য চক্রবর্তী প্রমুখ। সর্বোপরি ছিলেন, চার্চের ফাদার ভিনসেন্ট লোবো। তিনি জানিয়েছেন, “মেদিনীপুর নির্মল হৃদয় আশ্রম তথা চার্চের মাঠে গত ৩৫ বছর ধরে এই মেলা আয়োজিত হচ্ছে। এই মেলা ঘিরে মেদিনীপুর শহর তথা জেলাবাসীর একটা অন্যরকম আবেগ রয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিনের উৎসব শুরু হয়েছে। বড়দিনের বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেছেন জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। আগামী ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মেলা। কোভিড না থাকলেও, মেলা ঘিরে সচেতনতামূলক সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়াও, কয়েকশো স্বেচ্ছাসেবক আছেন, অপ্রীতিকর যেকোনো ঘটনার মোকাবিলা করতে।” অন্যদিকে, বড়দিন উপলক্ষে এদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পিকনিকে মেতে উঠেছিলেন কয়েক হাজার জেলা বাসী। বিভিন্ন পিকনিক স্পটেই ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি! বিগত বছরের ভয়াবহ স্মৃতি (৩ জনের মৃত্যু)-কে স্মরণে রেখে রেললাইন ও রেল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় সেলফি পিপাসুদের রুখতে রেল পুলিশের বিশেষ সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে। কোথাও কোথাও আনন্দের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও, শহর ও শহরের উপকণ্ঠে পিকনিককে কেন্দ্র করে ‘বড়দিন’ এ বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেই কোতোয়ালি থানার পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।

thebengalpost.net
পিকনিকের আনন্দে: