দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ অক্টোবর: মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। যুগ যুগ ধরে এই পুণ্যলগ্নে পূর্ব পুরুষদের তর্পণে মগ্ন হয়ে ওঠেন আপামর হিন্দু ও বাঙালিরা। প্রতি বছরের মতো এবারও মেদিনীপুর শহর লাগোয়া কংসাবতী নদীর গান্ধী ঘাট, আমতলা ঘাট ও ডিএভি ঘাটে ভোর থেকেই সাধারণ মানুষ ভিড় জমান। আয়োজনের ত্রুটি রাখেনি মেদিনীপুর পৌরসভা। শহর লাগোয়া কংসাবতী নদীর ঘাটগুলি গতকাল থেকেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। একপাশে পুরুষ ও অন্য পাশে মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভোর থেকেই নদীতে নজরদারী চললো পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। এর মধ্যেই, পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণে মেতে উঠলেন সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, মেদিনীপুর পৌরসভার বিশেষ উদ্যোগে এবার বের হলো এক সুসজ্জিত ট্যাবলো। তাতে বীরেন্দ্র কণ্ঠে ধ্বনিত হল- মহালয়ার স্তোত্র পাঠ, চণ্ডীপাঠ। সেই ট্যাবলো থেকেই দেওয়া হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তাও।
অতিবৃষ্টি আর অতিমারীর প্রকোপে পুজোর আনন্দ এবার অনেকটাই ম্লান। গত বছরের মতো এবারও কোভিড বিধি মেনে পুজো পালন করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তিনদিক খোলা প্যান্ডেল করতে হবে। প্রবেশদ্বার ও প্রস্থান পথ পৃথক করতে হবে। পুজো প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পুজো কার্নিভাল এবং বিসর্জনের অনুষ্ঠান। এত সবকিছুর মধ্যেও পুজো হচ্ছে- এটাই বড় কথা! আর এই পুজো ঘিরেই বাঙালির উৎসাহ ও আবেগ। চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি মেদিনীপুর পৌরসভাও। অস্বীকার করার উপায় নেই, এখনো জলমগ্ন শহরের কংসাবতী নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা। তা সত্ত্বেও মহালয়ার আনন্দ কিংবা তর্পণ অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে পালন করার জন্য, একযোগে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পৌরসভা, পুলিশ ও প্রশাসন। পৌরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপারসন সৌমেন খান বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী’র নির্দেশে ও মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া’র পরামর্শে, সাধারণ মানুষের জন্য সবকিছু সুন্দরভাবে আয়োজন করা হয়েছে।” সবমিলিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা লগ্ন নিরাপদেই পালিত হল। দুঃখ-ব্যথা-শোক ভুলে দেবী পক্ষ-কে স্বাগত জানালেন মেদিনীপুরবাসী।