thebengalpost.net
ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল উৎসব (ফাইল ছবি):

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম, ১৬ জানুয়ারি: ঘরের লক্ষ্মীদের খুশি করতে গিয়ে, ভান্ডারের ‘লক্ষ্মী’ বিরূপ! টান পড়েছে কোষাগারে। তাই, জঙ্গলমহল উৎসবে এবার কাটছাঁট করা হচ্ছে। কমানো হচ্ছে ব্যায়বরাদ্দ। আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। ঝাড়গ্রামে জঙ্গলমহল উৎসবে তাই জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, ‌পৌরসভার চেয়ারম্যান-রাই গান গাইবেন, আবৃত্তি করবেন। এমনটাই জানা গেছে প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে। অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও বরাদ্দ কমিয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এবার শুধু জেলাতেই অনুষ্ঠান হবে বলে জানানো হয়েছে। ব্লকগুলিতে এবার কোনো অনুষ্ঠান হবেনা। প্রসঙ্গত, ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে হবে নবম বর্ষের জঙ্গলমহল উৎসব। প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে, ভান্ডারে লক্ষ্মীর অভাবের ফলেই এবার জৌলুশ কমতে চলেছে জঙ্গলমহল উৎসবের।

thebengalpost.net
মেদিনীপুর কলেজ কলেজিয়েট মাঠে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ:

জানা গেছে, ঝাড়গ্রামে এবার মঞ্চ মাতাবেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সহ পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, “বাইরের শিল্পীদের অনুষ্ঠান এ বার হচ্ছে না। উৎসবে প্রশাসন-পুলিশের অতিথিরাই গান গাইবেন, কেউ আবৃত্তি করবেন। সংস্কৃতির যে যে বিষয়ে প্রশাসন-পুলিশের যাঁরা পারদর্শী, তাঁরা মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবেন।” সূত্রের খবর, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জঙ্গলমহল উৎসব সংক্রান্ত এক বৈঠকে এমন প্রস্তাবই দিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল ও প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। প্রশাসন-পুলিশের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সূত্র বলছে, ঝাড়গ্রামের মঞ্চে গান গাইবেন জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল। জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট শঙ্খশুভ্র দে এবং বিনপুর থানার আইসি স্বরূপ বসাক-রা ভালো গান করেন বলে জানা যায়। লালগড় থানার আইসি অরিন্দম ভট্টাচার্য ভাল গিটার বাজান। জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা জানিয়েছেন, “খুব ভাল উদ্যোগ। পুলিশের মধ্যে যাঁরা গান করেন, যাঁরা আবৃত্তি করেন, যাঁরা যন্ত্রসঙ্গীতে পারদর্শী, তাঁদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বলা হবে।” জানা যায়, মহড়াও শুরু হয়েছে। পুরপ্রধান কবিতা ঘোষের গলায় সমস্যা রয়েছে। তবে তিনিও জানিয়েছেন, “উৎসবের দিনে গলা ভাল থাকলে ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’ গাইব। নয়তো ‘পূজারিণী’ আবৃত্তি করব।” প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা তো এমনিতেই সাঁওতালি সিনেমার নামকরা শিল্পী। তিনিও ‘চমক’ দিতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন!

এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরে জঙ্গলমহল উৎসব হবে জেলা সদর মেদিনীপুরের কলেজ কলেজিয়েট ময়দানে। মাঠে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ ও স্টল। সেজে উঠছে উৎসব প্রাঙ্গন ও তার আশেপাশের এলাকা। উল্লেখ্য যে, আগে জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতেও উৎসব হত। এ বার অবশ্য ব্লকস্তরে উৎসব হচ্ছে না। শুধু জেলাস্তরেই উৎসব হবে। বিভিন্ন মহলের অনুমান, রাজ্যের কোষাগারে টান পড়েছে! তাই উৎসব আয়োজনে কাটছাঁট। এবারের উৎসবের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে জেলাস্তরে একাধিক বৈঠক হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানী জানিয়েছেন, “মেদিনীপুরে জঙ্গলমহল উৎসব হবে। জঙ্গলমহলের সংস্কৃতিকে কুর্নিশ জানাতেই এই উৎসব।’’ উদ্বোধনে থাকার কথা জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাতো সহ জেলার বিধায়কদের। আদিবাসী নেতা আদিত্য কিস্কু প্রমুখেরও থাকার কথা। জানা গিয়েছে, অতিথি-তালিকা রাজ্য থেকেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন লোকসংস্কৃতির দল অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও, স্থানীয় শিল্পীরা বরাবরের মতোই সুযোগ পাবেন বলেও জানা গেছে।

thebengalpost.net
ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল উৎসব (ফাইল ছবি):