মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ অক্টোবর: “….সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি!” স্মৃতির সোনার-খাঁচায় আজও ‘বন্দী’ নানা রঙের সেই দিনগুলি। আর, ‘পুরানো সেই দিনের কথা’ মনে করিয়ে শহর মেদিনীপুরের সংযুক্তপল্লী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবারও তাঁদের মণ্ডপ-সজ্জায় স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছেন। বিবর্তনের হাত ধরে প্রায় বিলীন হতে চলা ডাকবাক্স, পোস্টকার্ড, গ্রামোফোন, ক্যাসেট, সিডি প্রভৃতির ‘ইতিকথা’ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপ সজ্জায়। থিমের নামও ‘ইতিকথা’। ভাবনায় ও সৃজনে শিল্পী প্রশান্ত খাটুয়া। মহা পঞ্চমীর সন্ধ্যায় পুজো উদ্বোধনেও চমক দিতে ভোলেননি পুজো উদ্যোক্তারা!

thebengalpost.net
সংযুক্তপল্লীর পুজো উদ্বোধন:

thebengalpost.net
বিজ্ঞাপন (হোটেল অন্নপূর্ণা, রবীন্দ্রনগর, মেদিনীপুর শহর):

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংযুক্তপল্লীর পুজো উদ্বোধন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তাঁর ‘দুই পাশে’ ছিলেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা এবং মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান। ছিলেন কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ পানিগ্রাহী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী সরকার প্রমুখও। রাজনৈতিক ‘মতাদর্শ’ ভুলে শাসকদলের জেলা সভাপতি সহ অন্যান্যদের ‘সাদরে’ বরণ করে নেন সংযুক্তপল্লীর সভাপতি তথা সিপিআইএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিনহা। তাপস জানান, “উৎসবের দিনগুলিতে আমরা সবাই এক! এটাই তো আমাদের সংস্কৃতি।” উদ্বোধনে পুলিশ সুপারও মনে করিয়ে দেন, “ধর্ম (তা সে রাজনৈতিক হোক বা সামাজিক) যার যার, উৎসব সবার। বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবে এটা কিন্তু ভুললে চলবেনা!”

thebengalpost.net
সংযুক্তপল্লীর থিম :

সংযুক্তপল্লীর মন্ডপের প্রতিটি দেওয়ালে ফুটে উঠেছে ‘চিঠি’-তে ব্যবহৃত, ‘প্রায় বিলুপ্ত’ হতে চলা- শ্রীচরণেষু, পূজনীয়, পূজনীয়া, স্নেহের, কল্যাণীয়াসু, বিনীত প্রভৃতি শব্দ। তবে, সৃষ্টি, শিক্ষা, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির শহর মেদিনীপুর থেকে ‘সৌজন্য’ যে বিন্দুমাত্র বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, তাও অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছে সংযুক্তপল্লীর এই আয়োজন। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, মেদিনীপুর শহরের দেশবন্ধুনগর পুজো কমিটির মণ্ডপ ও থিমেও এবার প্রায় একই ভাবনা ফুটে উঠেছে। তাঁদের থিমের নাম- ‘দ্য অ্যাড্রেস’। থিম সাজিয়েছেন রাহুল নন্দী। প্রতিমা তৈরি করেছেন প্রশান্ত প্রধান। পুজোর উদ্বোধন করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক কেম্পা হোন্নাইয়া, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী প্রমুখ। পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে সত্যশঙ্কর সাঁতরা বলেন, “সেই নস্টালজিয়া ফিরিয়ে দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ।”

thebengalpost.net
দেশবন্ধুনগরের মন্ডপ:

thebengalpost.net
দেশবন্ধুনগরের অন্দরসজ্জা: