দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ অক্টোবর: প্রশাসনের ‘কোভিড-বিধি’কে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রেলশহর খড়্গপুরে ১১৬ তম ‘রাবণ দহন’ বা ‘রাবণ বধ’ অনুষ্ঠিত হল। প্রায় ২০-৩০ হাজারের বেশি (বেসরকারি মতে প্রায় ৫০ হাজার) মানুষের ভিড়ের মধ্যেই এই ‘রাবণ দহন’ পর্ব অনুষ্ঠিত হল, দশেরা উৎসব কমিটির আয়োজনে, খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে এই অনুষ্ঠান পালিত হল। আয়োজকরা কয়েক হাজার মাস্ক বিলি করলেও, হাজার হাজার মাস্ক-বিহীন আবালবৃদ্ধবনিতা-কে দেখা গেল এই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে। কাটা হয়েছিল লক্ষ্মণ-গন্ডী, তবে জনস্রোতের চাপে সেসব ‘গন্ডী’ ভেঙে চুরমার হয়ে গেল! এমনকি, মঞ্চেও স্বয়ং বিধায়ক, প্রাক্তন বিধায়ক সহ অনেককেই দেখা গেল মাস্ক-ছাড়াই বসে থাকতে। সংক্রমণ ছড়াতে পারে তো? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা জানিয়েছেন, “সব ঈশ্বরের উপরই ছেড়ে দিয়েছি!” পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি’কে বলতে শোনা গেল, “উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে সর্বোতভাবে কোভিড বিধি মেনে চলার চেষ্টা করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজার। কাটা হয়েছে গোল গোল গন্ডী। তবে, মানুষের আবেগের কাছে হয়তো বিধি কিছুটা হার মেনেছে!” যদিও, মঞ্চে থাকাকালীন দীর্ঘক্ষণ তাঁর মুখেও ছিলনা মাস্ক। উৎসব কমিটির অন্যতম কান্ডারী তথা খড়্গপুরের পৌরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকাররের মুখেও দেখা যায়নি মাস্ক! তাঁরা ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল, শাসকদলের মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, প্রাক্তন বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষ সহ অন্যান্যরা।

thebengalpost.net
রাবণ দহন :

thebengalpost.net
ভিড়ের মাঝে শিশুও :

প্রথা মেনে শুক্রবার অর্থাৎ বিজয়া দশমী ও দশেরা’র সন্ধ্যায়, জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল রাবণের দেহে অগ্নিসংযোগ করেন। তিনি বলেন, “প্রতীকী এই রাবণ দহন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শুভ শক্তির জয়গান গাওয়া হয়। আপনারা বিধি মেনে উৎসব উপভোগ করুন!” কিন্তু, কোথায় বিধি? ভিড়ের চাপে বিধি ভেঙে খানখান। এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিনই জেলার সর্বাধিক (৯) সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া গেছে খড়্গপুরেই। শুধু খড়্গপুর নয়, জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই পালিত হয়েছে ‘রাবণ দহন’ কিংবা আতসবাজির প্রদর্শনী অনুষ্ঠান। তবে, সবটাই নাকি করা হয়েছে, প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই, মানুষের আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে! জঙ্গলমহলের পিড়াকাটা, সাতপাটি সহ কয়েকটি জায়গায় আবার প্রশাসনিক বিধি মেনে, বাতিল করা হয়েছে ‘রাবণ দহন’ অনুষ্ঠান। এদিকে, শালবনী ব্লকেরই গোবরু’তে এই আতসবাজি প্রদর্শনী’র সময় এক মহিলার মাথায় বাজি পড়ে গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটে! তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

thebengalpost.net
মঞ্চ :

thebengalpost.net
জনসমুদ্র :