মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন:প্রকাশিত হল মাধ্যমিক পরীক্ষার (২০২২) রেজাল্ট। এবারের মেধাতালিকায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে ৬ জন আছেন। মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন, ঘাটালের ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রৌনক মন্ডল (৬৯২)। সপ্তম ও অষ্টম স্থানে আছেন যথাক্রমে, মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবনের দুই ছাত্র, যথাক্রমে- রনিত সাউ (৬৮৭) ও দেবমাল্য নিয়োগী (৬৮৬)। রনিতের বাড়ি শহরের পালবাড়িতে। বাবা অংকের শিক্ষক। রনিত জানালেন, “এই ফলাফলে সবথেকে বেশি অবদান বাবার। ‌ তবে, বিদ্যালয় ও গৃহশিক্ষকদের অবদানও অপরিসীম। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই।” অন্যদিকে, দেবমাল্য’র বাড়ি শহরের জর্জকোর্ট এলাকায়। মেদিনীপুর শহরের এই কৃতী সন্তানের বাড়িতেও এখন খুশির বন্যা। এদিকে, ৬৮৭ নম্বর পেয়েই সপ্তম স্থানে আছেন, চন্দ্রকোনা টাউনের মল্লেশ্বরপুর সারদা বিদ্যাপীঠের (উচ্চ বিদ্যালয়ের) ছাত্র শাশ্বত সিং। শালবনী ব্লকের ভীমপুর এলাকার আদি বাসিন্দা হলেও বর্তমানে তাঁরা মেদিনীপুর শহরের আবাসে থাকেন। শাশ্বত’র বাবা সন্দীপ সিংহ চার্চের পুরোহিত এবং মা শুক্তি টুডু সিং মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জ ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষিকা। দেবমাল্য ও শাশ্বত দু’জনই ডাক্তার হতে চান। এছাড়াও, ৬৮৬ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থানে আছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের আরও এক ছাত্রী। পিংলার ধনেশ্বরপুর রাখাল চন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্রেয়সী ভুঁইয়া অষ্টম স্থান দখল করেছেন। তাঁর বাড়ি পিংলার বাসুদেবপুর এলাকায়। অপরদিকে, ৬৮৪ নম্বর পেয়ে দশম স্থানে আছেন ডেবরা ব্লকের রাধামোহনপুর বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র অয়ন কুমার পাল।

thebengalpost.net
রৌনক মন্ডল:

thebengalpost.net
মেয়েদের মধ্যে প্রথম শ্রেয়সী ভুঁইয়া :

এবার, পাশের হার ৮৬.০৬%। তবে, কোনও ফলাফল অসম্পূর্ণ নেই। এ বছর পূর্ব মেদিনীপুরে সাফল্যের হার সবচেয়ে বেশি। ৯৭.৬৩ শতাংশ। পাশের হারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কালিম্পং। সেখানে পাশের হার ৯৪.৭২ শতাংশ। তার পরে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এই জেলায় পাশের হার ৯৪.৬২%। এরপর, যথাক্রমে- কলকাতা-৯৪.৩৬%, ঝাড়গ্রাম-৯২.০৭%, উত্তর ২৪ পরগনা-৯১.৯৮%, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-৮৯.৬১%, মালদহ-৮৭.১১%। প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, করোনার কারণে গত দু’বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। এ বছর ৭ মার্চ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় ১৬ মার্চ। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৫৯। আর ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৮০৪ জন। এ বছরের মাধ্যমিকে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ১১ শতাংশ বেশি।

thebengalpost.net
বাবা-মা’র সঙ্গে মেদিনীপুর শহরের রনিত সাউ:

এবার, মেধাতালিকায় (প্রথম দশে) আছেন ১১৪ জন। প্রথম হয়েছেন দু’জন। বাঁকুড়ার রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন হাই স্কুলের অর্ণব ঘড়াই এবং বর্ধমান সিএমএস স্কুলের রৌনক মন্ডল। দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩।
৬৯২ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হয়েছে মালদহের কৌশিকী সরকার ও পশ্চিম মেদিনীপুরের (ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়) রৌনক মন্ডল। ৬৯১ নম্বর পেয়ে যুগ্ম তৃতীয় হয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের অনন্যা দাশগুপ্ত এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দেবশিখা প্রধান। এদিকে, ঘাটালের কোন্নগরের বাসিন্দা রৌনক মন্ডল (Rounak Mandal) মাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের নাম উজ্জ্বল করেছে। বাবা তাপস কুমার মন্ডল পেশায় শিক্ষক। তবে গৃহ শিক্ষকদের অবদান বেশি বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবার। প্রতিদিন প্রায় ৮-৯ ঘন্টা করে পড়াশোনা করেছেন বলে রৌনক জানিয়েছেন।

thebengalpost.net
শাশ্বত সিং:

thebengalpost.net
মেদিনীপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র দেবমাল্য নিয়োগী অষ্টম স্থানে:

উল্লেখ্য যে, ফল প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে স্ক্রুটিনির জন্য আবেদন করতে হবে অনলাইনে, জানালেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এও জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ হবে ৪ মার্চ। প্রথম দিন (২৩ ফেব্রুয়ারি) হবে, প্রথম ভাষার পরীক্ষা। ২৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ভাষার। এরপর, ২৫ ফেব্রুয়ারি ভূগোল, ২৭ ফেব্রুয়ারি ইতিহাস, ২৮ ফেব্রুয়ারি জীবনবিজ্ঞান, ২ মার্চ অঙ্ক, ৩ মার্চ ভৌতবিজ্ঞান এবং ৪ মার্চ ঐচ্ছিক বিষয়ের পরীক্ষা হবে। এবারের মেধাতালিকা অনুযায়ী, ১১৪ জন রয়েছেন প্রথম দশে। প্রথম হয়েছেন ২ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। দ্বিতীয় হয়েছেন ২ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। তৃতীয় হয়েছেন ২ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। চতুর্থ হয়েছেন ৪ জন। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০। পঞ্চম হয়েছেন ১১ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯। ষষ্ঠ হয়েছেন ৬ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। সপ্তম হয়েছেন ১০ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭। অষ্টম হয়েছেন ২২ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। নবম হয়েছেন ১৫ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫। দশম হয়েছেন ৪০ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। মাধ্যমিকের রেজাল্ট জানতে এখানে ক্লিক করুন।

thebengalpost.net
কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা মেদিনীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে: