মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ ফেব্রুয়ারি: শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দিন, প্রথম ভাষা অর্থাৎ বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দুই ছাত্রী। দ্রুত তাদের ভর্তি করা হয় নিকটবর্তী হাসপাতালে। এরপর, হাসপাতালের বেডে বসেই বাকি পরীক্ষা দেয় যথাক্রমে খড়্গপুর ও ঘাটালের এই দুই ছাত্রী। শুক্রবার বিকেলে ঠিক এমনটাই জানিয়েছেন সংসদের জেলা মনিটরিং কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রামজীবন মান্ডি এবং সুদীপ্ত মাইতি। জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১০-টা নাগাদ পরীক্ষা শুরুর পরই খড়্গপুর শহরের হিজলি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এক ছাত্রী। সেন্টার ইনচার্জ সহ সংসদের আধিকারিকদের তৎপরতায় দ্রুত ওই ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। জানা যায়, নন্দিতা মাহাত নামে খড়্গপুর শহরের অতুলমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী নির্ধারিত সময়েই তার পরীক্ষা কেন্দ্র হিজলি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছিল। তবে, পরীক্ষা শুরু হতে না হতেই সকাল দশটা নাগাদ ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ছাত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে বুঝতে পেরেই সংশ্লিষ্ট ইনভিজিলেটর সেন্টার ইনচার্জ সহজ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের খবর দেন। দ্রুত ওই ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে ওই ছাত্রীকে অক্সিজেন দেওয়া হয় এবং তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর, হাসপাতালের বেডে বসেই ওই ছাত্রী পরীক্ষা দেয়। তবে, পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে বেলা ১টা নাগাদ ফের ওই ছাত্রী অসুস্থতা অনুভব করলে পুনরায় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শুরু করা হয়।
ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার কয়েক মাস আগে ছাত্রীটি অসুস্থ হয়েছিল। তাছাড়াও, গত কয়েকদিন রাত জেগে পড়াশোনা করেছে। আর তাতেই এদিন অসুস্থ হয়ে শ্বাসকষ্ট অনুভব করে সে। অন্যদিকে, ঘাটালের মহারাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী বর্ষা সামন্ত-ও পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরে অসুস্থ হয়ে যায়। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল লছিপুর বীণাপাণি উচ্চ বিদ্যালয়। দ্রুত ওই ছাত্রীকে সেন্টার ইনচার্জ সহ অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকা এবং সংসদের আধিকারিকদের তৎপরতায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে ওই ছাত্রী হাসপাতালের বেডে বসেই বাকি পরীক্ষা দেয়। ওই ছাত্রীর ক্ষেত্রে গুরুতরো শারীরিক সমস্যা ধরা পড়েনি বলে হাসপাতাল ও সংসদ সূত্রে জানা গেছে। পরীক্ষার আতঙ্কেই ছাত্রীটি অসুস্থ হয়ে যায় বলে প্রাথমিক ধারণা। এদিকে, সংসদের জেলা মনিটরিং কমিটির দুই আহ্বায়কই জানিয়েছেন, এই দু’টি ঘটনা ছাড়া জেলার ৮০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৪১ হাজার পরীক্ষার্থী (মোট পরীক্ষার্থী- ৪০,৯৬৯) সুষ্ঠুভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে। বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী অবশ্য অনুপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে।