দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ফেব্রুয়ারি: ঠিক ২ মাসের মাথায় ‘প্রাইমারি টেট-২০২২’ (Primary TET- 2022) এর ফল প্রকাশ করলো প্রাইমারি বোর্ড (WBBPE) বা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২০২২ এর ১১ ডিসেম্বর পরীক্ষা হয়েছিল। আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা নাগাদ কিছুটা মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের ধাঁচে ফল প্রকাশ করলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মতোই এই প্রথমবার টেটের মেধাতালিকাও প্রকাশ করা হলো। জানিয়ে দেওয়া হল, পাসের হার থেকে শুরু করে প্রথম দশে থাকা টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের নাম ও জেলার নাম। সাংবাদিক বৈঠকে ড. গৌতম পাল জানান, পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩২ জন। তার মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৬ লক্ষ ১৯ হাজার ১০২ জন। এঁদের মধ্যে পাশ করেছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪৯১ জন। অর্থাৎ মোট পরীক্ষার্থীর ২৪.৩১ শতাংশ। পাস করা চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে মহিলা প্রার্থী পাস করেছেন ৬৯ হাজার ৪০৮ জন অর্থাৎ ৪৬.১২১ শতাংশ। পুরুষ পাশ করেছেন ৮১ হাজার ৭৭ জন অর্থাৎ ৫৩.৮৭ শতাংশ। অন্যান্য (থার্ড জেন্ডার) পাশ করেছেন ৬ জন। মেধাতালিকায় অর্থাৎ ১ থেকে ১০ এর মধ্যে জায়গা পেয়েছেন ১৭৭ জন।
প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে প্রথম হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কন্যা ইনা সিংহ। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১৩৩। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন চার জন। চার জনই মেয়ে। হুগলির মৌনিশা কুণ্ডু, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেঘনা চক্রবর্তী (বেলদা) ও দীপিকা রায় (পিংলা) এবং পূর্ব বর্ধমানের অদিতি মজুমদার। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ১৩২। তৃতীয় স্থানেও রয়েছেন ৪ জন। উত্তর ২৪ পরগণার মেহদি হাসান, পূর্ব মেদিনীপুরের বিকাশ ভক্ত, পশ্চিম মেদিনীপুরের মনামি অধিকারী এবং বাঁকুড়ার প্রহ্লাদ মণ্ডল। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ১৩১। ১৩০ নম্বর পেয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন ৬ জন। এর মধ্যে আছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের তাপসী বাগ। এ ছাড়া প্রথম দশের মধ্যে ১৭৭ জন রয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌতম পাল। তিনি জানান, রেজাল্ট ঘোষণা হওয়ার পরই, আজ, বেলা ৩ টা’র পর থেকেই পর্ষদের দু’টি ওয়েবসাইটে (www.wbbpe.org/ www.wbprimaryeducatiom.org) বাকি প্রায় ৬ লক্ষ ২০ হাজার টেট পরীক্ষার্থীও তাঁদের পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন।
এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেঘনা’র বাড়ি বেলদায়। বাবা সুজিত চক্রবর্তী রেলের একজন ঠিকাদার এবং এলাকার সুপ্রতিষ্ঠিত একজন সমাজকর্মী বলে জানা যায়। মেঘনা প্রথম থেকেই মেধাবী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রাথমিকে শিক্ষকতা নয়, তাঁর লক্ষ্য ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়া বলে জানিয়েছেন মেঘনা। সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছেন মেঘনা। এই মুহূর্তে তিনি কলকাতায় আছেন। অপরদিকে, দীপিকা পিংলার ধনেশ্বরপুরের মেয়ে। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে দীপিকা’র স্বপ্ন শিক্ষিকা হওয়া। এর আগে, ২০১৭ সালের টেটেও পাস করেছেন দীপিকা। পর্ষদের ২০২৩ এর নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অংশ নিয়েছেন তিনি। গত ১৭ জানুয়ারি (২০২৩) সল্টলেকের প্রফুল্ল চন্দ্র ভবনে গিয়ে ইন্টারভিউও দিয়েছেন দীপিকা। মেঘনা বি.এড (B.Ed) এবং দীপিকা ডিএলএড (D.El.Ed) প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তাঁরা দু’জনই ১৫০’র মধ্যে ১৩২ নম্বর পেয়েছেন ২০২২’র প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায়। দু’জনের পরিবারই চায়, চাকরি পাক যোগ্যরাই!