দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ এপ্রিল: পরীক্ষা চলছে নাকি টোকাটুকির ট্রেনিং, বোঝা মুশকিল! একটি ছোট্ট শ্রেণী কক্ষে বেঞ্চ পিছু ২-৩ জন করে পরীক্ষার্থী। পারলে এ ওর ঘাড়ে চেপে বসে! বেঞ্চে খোলা নানা ধরনের নোটসের জেরক্স থেকে বই-খাতা পত্র। আছে মোবাইলও। তার থেকেও বড় কথা, ওই পরীক্ষার হলে ৩-৪ জন শিক্ষক মিলে পরীক্ষার্থীদের রীতিমতো প্রশ্ন ধরে ধরে উত্তর করিয়ে দিচ্ছেন! হ্যাঁ, বুধবার (১৯ এপ্রিল) ঠিক এভাবেই পরীক্ষা হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের চার নম্বর অঞ্চলের অন্তর্গত মহিষাগেড়্যা হাই মাদ্রাসায়। আর, খবর পেয়ে, ওই মাদ্রাসায় গিয়ে সেই ছবি তুলতে গিয়ে ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমের এক সাংবাদিক রীতিমতো হেনস্থার শিকার হলেন ‘কীর্তিমান’ ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকদের দ্বারা! তাঁর মোবাইল কেড়ে নিয়ে এক ‘বেয়াদব’ ছাত্র রীতিমতো প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন বলেও ওই সংবাদ কর্মীর অভিযোগ। ওই চ্যানেলের তরফে ইতিমধ্যে জেলার ডি.আই অফিসে অভিযোগও জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলেও ওই সাংবাদিক জানিয়েছেন। আর, স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলাজুড়ে!

thebengalpost.net
শিক্ষকদের সাহায্যে ছাত্রদের টোকাটুকি:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, একদিকে যখন তীব্র দাবদাহের কারণে রাজ্য সরকার তথা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়’গুলিতে ছুটি ঘোষণা করেছেন, সেখানে তীব্র গরম ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে, শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ অনুমতিক্রমে (প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য অনুযায়ী) কেশপুর মহিষাগেড়্যা হাই মাদ্রাসায় বুধবার অনুষ্ঠিত হল পরীক্ষা (ভোকেশনাল কোর্সের পরীক্ষা বলে জানা যায়)। আর, পরীক্ষার হলের মধ্যেই দেদার চললো মোবাইল, নোটস, বই নিয়ে টুকলি। শুধু তাই নয়, ৩০-৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে (পরীক্ষার্থীকে) ৩-৪ জন শিক্ষক মিলে এই টুকলি বা নকল করার কাজে সাহায্য করলেন। আর, সেই খবর পেয়েই স্কুলে গেলে সংবাদমাধ্যমকে হুমকি দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা! রীতিমতো তেড়ে যায় কয়েকজন ছাত্র। যদিও, কি পরীক্ষা হচ্ছে, কোন নির্দেশে পরীক্ষা হচ্ছে, কেন তাঁরা এভাবে টুকলিতে সাহায্য করছেন; তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি শিক্ষকরা। আর, ছাত্ররা হুমকি দিতে থাকে, এই খবর করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে! এই বিষয়ে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, তাঁরা সরকারি নির্দেশ নিয়েই পরীক্ষা নিয়েছেন। তবে তিনি যেহেতু নিজে উপস্থিত ছিলেন না, তাই বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি তিনি। ডি.আই চাপেশ্বর সর্দার বলেন, “অবিলম্বে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ওই ছাত্রদের এত সাহস হয় কি করে!” ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে জেলাজুড়ে।

thebengalpost.net
ছাত্রের হুমকি: