শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ মে: “গাছেরও প্রাণ আছে”। প্রমাণ করেছিলেন আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগদীশ দুয়ারী-র পারলৌকিক ক্রিয়াতে তাঁর শিক্ষক-পুত্র দেবব্রত দুয়ারি বার্তা দিলেন, “গাছ ছাড়া আর বাঁচবেনা এই পৃথিবী! যেকোনও অনুষ্ঠানে তাই উপহার দিন চারা গাছ।” বলাই বাহুল্য, চলতি মরশুমে প্রায় ৪৬-৪৭ ডিগ্রির ভয়াবহ তাপমাত্রায় পুড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুর। শুধু মেদিনীপুর, বাঁকুড়া বা পুরুলিয়াই নয়; চলতি বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙে গেছে প্রায় গোটা বাংলা জুড়ে। বিশ্ব উষ্ণায়নের (Global Warming) করাল গ্রাসে হাঁসফাঁস করছে প্রায় গোটা বিশ্বই! বরফ গলছে হিমালয়ে। ভৌম জলস্তর হু হু করে নামছে! এ বিশ্বকে তথা এই প্রকৃতিকে বাঁচাতে তাই বৃক্ষ রোপনের কোনও বিকল্প নেই! পরবর্তী প্রজন্মের স্বার্থে ধূসর প্রকৃতিকে ফের সবুজ করে তুলতেই হবে। প্রয়াত বাবার পারলৌকিক ক্রিয়াতে আমন্ত্রিত অতিথিদের হাতে সবুজ চারা গাছ তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের শিক্ষক দেবব্রত দুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বার্তাই যেন ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

thebengalpost.net
thebengalpost.net

কাকতালীয় হলেও সত্য, এদিনই (২ মে, বৃহস্পতিবার) আবার মেদিনীপুর শহরে মনোনয়ন জমা দিতে এসে ‘জনপ্রিয়’ অভিনেতা তথা শাসকদলের ঘাটাল লোকসভার প্রার্থী দেব (দীপক অধিকারী)-ও অঙ্গীকার করেছেন, “আমি এই নির্বাচনে যতগুলি ভোট পাব, ততগুলি গাছ লাগব। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের হাত থেকে ঘাটালবাসীকে রক্ষা করতে এটা আমার অঙ্গীকার।” মানবতার বার্তা দিয়ে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে রক্তদানও দেব ওরফে দীপক অধিকারী। উল্লেখ্য যে, এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ও পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার জেলাপরিষদ প্রার্থী তথা শিক্ষক শান্তনু দে কথা দিয়েছিলেন, “যত ভোটে জিতব, ততগুলি গাছ লাগাব।” জেতার পরই অবশ্য নিজের ‘কথা’ রাখতে তৎপর হয়েছিলেন জেলাপরিষদের সদস্য শান্তনু।

অপরদিকে, সবং ব্লকের বলপাই ৯ নং অঞ্চলের গোটগেড়িয়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জগদীশ দুয়ারী গত ১৫ দিন আগে প্রয়াত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর পরলৌকিক ক্রিয়া (২ মে)। জগদীশ বাবুর ছেলে দেবব্রত দুয়ারীও পেশায় শিক্ষক। বাবার পারলৌকিক ক্রিয়াতে শিক্ষক দেবব্রত আমন্ত্রিত প্রায় দেড় হাজার অতিথির হাতে তুলে দিলেন চারাগাছ। সেই সঙ্গে দিলেন পরিবেশ রক্ষার বার্তাও। দেবব্রত বলেন, “পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এখন থেকে মানুষের উচিত গাছ না কেটে, প্রতিটি গাছকে প্রাণ দিয়ে রক্ষা করা! আর, প্রত্যেকের উচিত তাঁর আশেপাশে যতগুলি সম্ভব গাছ লাগানো।” তিনি এও বলেন, “আমি চাই প্রতিটি পরিবার যেকোন অনুষ্ঠানে তাঁদের খরচ থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে চারা গাছ তুলে দিন। আশা করি, এজন্য নিকটবর্তী বনদপ্তরের সাহায্যেও পেয়ে যাবেন। তাহলেই আগামীদিনে আবারও সবুজে ভরে ওঠবে এই প্রকৃতি, শীতল হবে পৃথিবী।”

thebengalpost.net
সবুজের আহ্বান: