দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, সুদীপ্তা ঘোষ, ১৩ আগস্ট: সালটা ২০১৯ এর নভেম্বর মাস। হটাৎ করেই ইন্টারনেটে প্রায় ঝড়ের মতো ভাইরাল হতে থাকে একটাই নাম, রানু মন্ডল। আর, রানু মন্ডল নামটা শুনলেই মনে পড়ে যায়, রানাঘাট স্টেশনের এক মহিলার ময়লা শাড়ি, উস্কো খুস্কো চুল নিয়ে গলায় “এক পেয়ার কা নাগমা হ্যায়” গানটির কথা! সেই গানই স্টেশনে ভিক্ষা করা রানু মন্ডলের জীবন সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছিল! ইউটিউবার অতনুর হাত ধরে এক লাফেই পৌঁছে গিয়েছিলেন স্বপ্নের শহর মুম্বাইয়ে। বলিউডে হিমেশ রেশামিয়ার সাথে “তেরি মেরি” গানে গলাও মিলিয়েছিলেন রানু। কিন্তু, তারপর হঠাৎই আসে এক বড় পরিবর্তন। নিজের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আবার ফিরে আসতে হয় সেই দুর্বিষহ জীবনেই। ফের একবার সেই স্মৃতিই উস্কে দিল “বাচপান কা প্যায়ার” গান গেয়ে ভাইরাল হওয়া ছোট্ট খুদে সহদেব দিরদো। সহদেবের গলায়, ছত্তিশগড়ের আঞ্চলিক চলচ্চিত্রের এই গানটি সম্প্রতি ইনস্টা থেকে ফেসবুকে রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে। টলিউড থেকে বলিউডের অভিনেতা অভিনেত্রী থেকে গায়ক, গায়িকা কেউই বাদ যাননি এই গানের ওপর ইনস্টাগ্রামে রিল বানাতে।
ভিডিওটিতে দেখা যায় ১০ বছরের ছোট খুদে সহদেব দিরদো নিজের স্কুলে এই গানটি গাইছে। সূত্র মতে এই ভিডিওটি প্রায় ২ বছরের পুরানো। স্কুলের এক শিক্ষক গানটি রেকর্ড করে তা ইন্টারনেটে প্রকাশ করেন। ছত্তিশগড়ের সুকুমা এলাকার ছিনগড় ব্লকের বাসিন্দা সহদেবের বাবা কৃষক। গানটি ভাইরাল হওয়ার পরেই বলিউডের গায়ক বাদশা তার সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেন। ইতিমধ্যেই, গত বুধবার ১১ আগষ্ট তিন মিনিট তিন সেকেন্ডের “বাচপান কা প্যায়ার” গানটি বাদশা রিমেক ভিডিও বানিয়ে তা প্রকাশ করেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩২ মিলিয়ন দর্শক এই ভিডিওটি দেখেছেন। এখনও পর্যন্ত ২.৮ মিলিয়ন দর্শক এই ভিডিওটি পছন্দ করেছেন। শুধু তাই নয়। গানটি ভাইরাল হওয়ার পরেই ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, গলায় মালা পরিয়ে সহদেবকে অভ্যর্থনা জানান। এমনকি, সম্প্রতি ইন্ডিয়ান আইডল ১২-র মঞ্চে অতিথি হিসেবেও দেখা যায় এই ছোট্ট খুদেকে।
হটাৎ করেই এই ফেম, দর্শকদের মাতামাতি ফের একবার মনে করিয়ে দেয় রানু মন্ডলের ঘটনা। কিছু দর্শক যেমন এই ঘটনার প্রশংসা করেছেন, কিছুজন হিংসে করছেন, ঠিক তেমনই কিছু নেটিজেনদের মতে এটা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি হচ্ছে, এইটুকু শিশুকে খামোখাই এতো স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠছে এই খুদেকে যে জগৎ এখন দেখানো হচ্ছে, ভবিষ্যতে তা বজায় থাকবে তো? হটাৎ করে উপরে উঠে, আবার নিচে নেমে গেলে যদি এই শিশুটি মানসিক অবসাদের শিকার হয় তার দায় কে নেবে! আপাতত নানা আলোচনার মধ্যেই রীতিমতো ট্রেন্ডে “বাচপান কা প্যায়ার”।