দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ ফেব্রুয়ারি: তিনি পেশায় চিকিৎসক। তবে, দীর্ঘদিন ধরেই ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত। কিন্তু, এতদিন তা ছিল কিছুটা পর্দার পেছনে। এবার তিনি সরাসরি রাজনীতির ময়দানে। একেবারে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার লড়াইয়ে অবতীর্ণ। তিনি মেদিনীপুর মেদিনীপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ গোলোক বিহারী মাজি। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় তাঁর প্রচারে দেখা গেল মেদিনীপুরের সেলিব্রেটি বিধায়ক জুন মালিয়া ছাড়াও টলিউডের একঝাঁক তারকাকে। তাঁদের মধ্যে জনপ্রিয় ‘কৃষ্ণকলি’ সিরিয়ালের কৃষ্ণকলি তিয়াসা রায়। তাঁকে ঘিরে তুমুল উন্মাদনা দেখা গেল ওয়ার্ডবাসীর মধ্যে। জেতার বিষয়ে একশো শতাংশ আশাবাদী ডাক্তারবাবু! তিনি বলেন, “সরাসরি রাজনীতিতে আমাকে দেখা না গেলেও, মেদিনীপুর শহরের ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। তা সবথেকে বেশি যিনি জানতেন, তিনি এই ওয়ার্ডের প্রয়াত বিদায়ী কাউন্সিলর ও প্রাক্তন পৌরপ্রধান প্রণব বসু। এই ওয়ার্ডে এতদিন মানুষ ভরসা করে এসেছিলেন তাঁকে। তাঁর চেয়ারম্যান হওয়ার পেছনেও পরোক্ষে আমার অবদান ছিল। তবে, তিনি পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে চলে গিয়ে ওয়ার্ডবাসীর সাথে একপ্রকার বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন! তবে, তিনি আজ আর নেই, তাঁর সম্পর্কে আমি খারাপ কিছু বলতে চাই না। শুধু এটুকুই বলবো, এই ওয়ার্ড আমি নিজের মত করে সাজাবো। বারবার ওয়ার্ড ঘুরে দেখে নিয়েছি কোথায় কি নেই। মানুষ আমার উপর ভরসা করছেন। আশা করছি বিপুল ব্যবধানেই জিতবো।”
এদিকে, গত কয়েকদিন ধরেই মেদিনীপুর শহরের প্রচারে ঝড় তুলেছেন বিধায়ক জুন মালিয়া। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কখনও রোড শো, কখনও র্যালি, আবার কখনও পায়ে হেঁটে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, “মেদিনীপুর পৌরসভার ২৫-টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল প্রার্থীরা জিততে চলছেন।” স্বভাবতই, তাঁদের দলের চিকিৎসক প্রার্থী তথা রেড ক্রশ সোসাইটির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার প্রেসিডেন্ট ডাঃ গোলোক বিহারী মাজি’র জেতা নিয়েও সংশয় নেই তাঁর! তিনি বলেন, “উনি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের পাশে আছেন। উনি তো জিতবেনই। আমরা শুধু ব্যবধান নিয়ে ভাবছি।”
অপরদিকে, রেলশহর খড়্গপুর এবং জেলা শহর মেদিনীপুরে জমিয়ে প্রচার ও যোগদান চালিয়ে যাচ্ছেন মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজয় হাজরা-ও। দুই শহরের প্রতিটি প্রার্থীদের জেতাতে নিত্যদিন নানা রণকৌশল অবলম্বন করছেন তিনি। কখনও পথসভা, কখনও বাড়ি বাড়ি প্রচার আবার কখনও শিক্ষক সংগঠনসহ বিভিন্ন ধরনের সংগঠনকে নিয়ে সভা করছেন তিনি। সঙ্গে বিজেপি সহ বিরোধী দলের ঘর ভাঙার কাজও চলছে। তবে, জেলা সভাপতি সুজয় সবথেকে জোর দিয়েছেন প্রতিটি প্রার্থীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে। খড়্গপুরে সেজন্য তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ঠিক করে দিয়েছেন পর্যবেক্ষক। আর, মেদিনীপুর শহরে প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই পৌঁছে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের দুয়ারে! রবিবার দেখা গেল ১৪ নং ও ২১ নং ওয়ার্ডের দুই প্রার্থী সঙ্ঘমিত্রা পাল এবং প্রাক্তন বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী-কে সঙ্গে নিয়ে প্রচার করতে। এই দুই ওয়ার্ডে তৃণমূলের লড়াই অপেক্ষাকৃত কঠিন হতে চলেছে বলেই কি প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি? সুজয় বললেন, “কোন ওয়ার্ডেই তৃণমূল প্রার্থীদের জয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকদের জয় কঠিন নয়। কঠিন হতে পারেনা। রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যবাসীর জন্য ঢালাও উন্নয়ন করেছেন। কর্মসংস্থান করেছেন। সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মানবিক, সমব্যথী, জয় জোহার প্রভৃতি তো আছেই। তবে, পৌরসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রতিটি বাড়ির সমস্যা দেখা উচিত। তাই, পথসভা, রোড শো’র সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচারে আমরা জোর দিচ্ছি।”