দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ ফেব্রুয়ারি: ২০০১ সালের সেই কুখ্যাত ‘ছোট আঙারিয়া গণহত্যা’র ঘটনা। কেঁপে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি থেকে সারাদেশ। মুক্তার, রবিয়াল, হায়দার, গফফার, শ্যামাপদ- পাচঁ তৃণমূল কর্মীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার তৎকালীন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি’র বিরুদ্ধে! প্রধান এবং একমাত্র সাক্ষী ছিলেন বক্তার মন্ডল। এরপর, ২১ বছরের সময় স্রোতে অনেক জল গড়িয়েছে! গ্রেপ্তার হয়েছেন তপন-শুকুর। বক্তারের বিরূপ সাক্ষীতে (২০০৮ সালে) ছাড়াও পেয়েছেন তাঁরা। ফের, ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে নতুন করে মামলা শুরু করেছে সিবিআই (২০১১ সালে)।

thebengalpost.net
বক্তার মন্ডলের মৃত্যু:

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

২০১৩-তে আদালতে ফের সাক্ষ্য দিয়েছেন বক্তার। যদিও রায়দান এখনও বাকি! তবে, চূড়ান্ত রায় শোনার আগেই, এলাকার জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা বক্তার মন্ডলের মৃত্যু হল রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে। হার্ট অ্যাটাক বা হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু বলে জানা গেছে। মাত্র ৫৭ বছর বয়সে মৃত্যু হল বক্তারের। তাঁর অকাল মৃত্যুতে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূলে শোকের ছায়া নেমে এলেও, তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “সাক্ষ্যদান সম্পন্ন হয়েছে। তাই, মামলার রায়দানের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না।”

thebengalpost.net
ছোটো আঙারিয়ার শহীদ বেদী :

thebengalpost.net
Advertisement (বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী প্রচার) :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গনহত্যার কান্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ও মূল সাক্ষী ছিলেন বক্তার মন্ডল। তবে, ২০০১ (৪ জানুয়ারি) এর সেই হাড় হিম করা ঘটনাতেও, তৎকালীন বাম আমলে চাপে পড়ে নাকি বক্তার বিরূপ সাক্ষী দেন। রাজ্যে পালাবদলের পর বক্তার একাধিকবার এই নিয়ে জানিয়েছেন, “সেই সময় সিপিআইএমের শিখিয়ে দেওয়া কথা আমাকে বলতে হয়েছিল। তবে, পরবর্তী সময়ে যে সাক্ষ্যদান করেছি, তাতে নিশ্চয়ই সুবিচার মিলবে।” তবে, এর মধ্যেই জেলার রাজনীতিতে অনেক জল বয়ে গেছে। নানা পরিবর্তন এসেছে বক্তার এর জীবনেও। বাম নেতা তপন ঘোষ এখনও গড়বেতার ডাকাবুকো সিপিআইএম নেতা। তবে, সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন শুকুর আলী। তাঁর ছেলে অবশ্য বিজেপি ঘনিষ্ট বলে এলাকাবাসীর দাবি। এদিকে, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে অনেক শোক এসেছে। সাত ছেলেমেয়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক ছেলে ও এক মেয়ের। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে গড়বেতায় খুন হয়েছেন তাঁর ভাই ওসমান মন্ডল। বক্তারের বুকেও বসেছিল পেসমেকার। অবশেষে, রবিবার সেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হল বক্তারের।

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (বিজ্ঞাপন) :

এলাকায় জনপ্রিয় হলেও, অত্যন্ত সাধারণ ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন বক্তার। ছিলনা পদের মোহ। তাই, একসময় দিনের পর দিন, খবরের কাগজের প্রথম পাতা জুড়ে নাম থাকলেও, জেলা বা ব্লক রাজনীতিতে তাঁর নাম কোনোদিনই শোনা যায়নি প্রথম সারিতে। বক্তার এর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে মিন্টু সেকথাই বলছিলেন, “বাবা তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। পদের মোহ তাঁর ছিলনা। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন, ছোট আঙারিয়া ঘটনার সুবিচার মিলবেই।” বিচার হয়তো মিলবে, তবে তখন আর বক্তার থাকবেন না! তাঁর মৃত্যুতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনীতির এক ‘বিতর্কিত’ অধ্যায়ের অবসান হল নিঃসন্দেহে।

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন) :

thebengalpost.net
Advertisement (নির্বাচনী বিজ্ঞাপন):