মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ এপ্রিল:মহাত্মা গান্ধী’র নাকে নাক লাগিয়ে সুন্দরী রমণী! ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী! কাশ্মীরের বদলে, বিরাট কোহলি-কে চাই! সোনিয়া গান্ধীর ছবিতে শিবসেনা প্রধান উদ্ভব ঠাকরের প্রণাম! মহারাষ্ট্রের রাস্তায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ! না, এগুলোর কোনটাই সত্য নয়। অথচ, না জেনেশুনেই এই সমস্ত ছবি বা ভিডিও হাজার হাজার মানুষ শেয়ার করে চলেছেন প্রতি মুহূর্তে। কিংবা, ২০১৪ সালের ভোজপুরি সিনেমায় কোনো মহিলা (অভিনেত্রীর) চরিত্রের ‘শ্লীলতাহানি’র ছবি পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের ঘটনা হিসেবে নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায়, আর তারই ফলস্বরূপ ধর্মীয় দাঙ্গা বাধে! কিন্তু, ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষ এই সমস্ত ছবি বা ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করবেন কিভাবে? কিভাবেই বা বুঝবেন, কোনটা আসল আর কোনটা নকল বা ফেক (Fake)? বর্তমান সময়ের অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এই বিষয় নিয়েই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University) মঙ্গলবার আয়োজন করেছিল, একদিবসীয় একটি ওয়ার্কশপ বা কর্মশালা (Workshop)। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘Learning tools of Online Fact Checking and fight against Fake News’। গুগল নিউজ ইনিসিয়েটিভ (Google News Initiative) এর সহায়তায় (Collaboration) আয়োজিত এই কর্মশালার প্রধান বক্তা বা বিশেষজ্ঞ (Speaker/Expert) হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন, গুগলের বিশেষ ট্রেনিংপ্রাপ্ত সাংবাদিক তথা সর্বভারতীয় একটি ইলেকট্রনিক্স সংবাদমাধ্যমের (News 18 Bangla) চিফ বুলেটিন প্রোডিউসার প্রলয় লাহা। অত্যন্ত মনোগ্রাহী আলোচনার মাধ্যমে তিনি এই বিষয়ে সঠিক পথনির্দেশ করলেন, কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং মেদিনীপুর শহরের সাংবাদিকদের।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় কর্মশালার উদ্বোধন করেন, উপাচার্য (Vice Chancellor) অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু। উপস্থিত ছিলেন, নিবন্ধক (Registrar) ড. জয়ন্ত কিশোর নন্দী, কলা ও বাণিজ্য বিভাগের ডিন অধ্যাপক তপন কুমার দে, কর্মশালার আহ্বায়ক তথা কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক সুনীল মল্লিক প্রমুখ। সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী পর্বের পরই, তথ্যনিষ্ঠ ও প্রযুক্তিনির্ভর আলোচনা শুরু করেন সাংবাদিক প্রলয় লাহা। গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ (Reverse Image Search) এর মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে দেন, আসলে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে ‘আসল’ ছবিতে ছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু। তবে, নাকে নাক ঠেকিয়ে নয়, অনেকটাই দূরে! ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে ছিলেন না নরেন্দ্র মোদী! ছিলেন কংগ্রেসের অন্য কেনো নেতা। পাকিস্তানিরা বিরাট কোহলি-কে চাননি, চেয়েছিলেন ‘আজাদি’ বা স্বাধীনতা! উদ্ভব ঠাকরে নিজের বাবা বাল ঠাকরে’র ছবিতে প্রণাম করছিলেন, সোনিয়া গান্ধীর ছবিতে নয়। আর, মহারাষ্ট্রের রাস্তায় কোনো বিস্ফোরণই হয়নি, বিদেশের কোনো পেট্রোলিয়াম গ্যাস বিস্ফোরণের ভিডিও ছিল সেটি! এসব কিছু যাচাই করার জন্য, তিনি বিভিন্ন ধরনের আধুনিক অ্যাপস বা ওয়েবসাইটের উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে ছবি বা ভিডিও’র প্রকৃত উৎস খুঁজে নেওয়া যাবে। ভিডিও যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তিনি ‘ইউটিউব ডেটা ভিউয়ার’ (YouTube Data Viewer) অ্যাপসের উল্লেখ করেন। একইরকম ভাবে, ফেসবুক, টুইটার- প্রভৃতি সমাজ মাধ্যমে থাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট বা পেজের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই বা বিশদ তথ্য লাভ করার খুঁটিনাটি দিকগুলো দেখিয়ে দেন।
এদিনের, কর্মশালায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক-গবেষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার প্রায় ১৫-২০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেছিলেন। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এই বিষয়ের আলোচনায় তাঁরা সমৃদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু জানিয়েছেন, “বর্তমান নেট দুনিয়ায় প্রতি মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ খবর, ছবি বা ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। না জেনেই অনেক সময় আমরা তা শেয়ার করে ফেলি! তাই, এই বিষয়ে যদি একটু জানা থাকে, কিছুটা হলেও সত্যাসত্য যাচাই করা সম্ভব। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য, গুগল সার্টিফায়েড সাংবাদিক বা বিশেষজ্ঞ প্রলয় লাহা আমাদের সময় দিয়েছেন বলে তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। শহরের বিভিন্ন সাংবাদিক থেকে শুরু করে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা যাতে এই বিষয়ে সমৃদ্ধ হতে পারেন, সেজন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।” সাংবাদিক প্রলয় লাহা জানান, “এই বিষয়ে আরও অনেক কিছু বলার বা জানানোর ছিল। কিন্তু, ৩-৪ ঘন্টার আলোচনায় সবটা হয়তো তুলে ধরা সম্ভব হলনা! পরবর্তী সময়ে, আবারও এই বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হলে, নিশ্চয়ই আসব।” এই ধরনের আরও কর্মশালা আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক (রেজিস্ট্রার) ড. জয়ন্ত কিশোর নন্দী।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…