মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ ডিসেম্বর: কেউবা সদ্য স্নাতক সম্পূর্ণ করেছেন। আবার কেউ স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করে একটা চাকরির জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই আবার স্নাতকের পরই উচ্চশিক্ষার প্রবেশিকা কিংবা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য জোরদার প্রস্তুতি চালাচ্ছেন। তবে তাঁদের কারুর লড়াই-ই সহজ নয়। বেশিরভাগ জনকেই পড়াশোনার সাথে সাথে, লড়তে হচ্ছে আর্থিক বাধার সঙ্গেও। মাঝপথে অনেকেই তাই ‘দিশা’ হারিয়ে ফেলার ভয় পাচ্ছেন! জেলার এমনই দুঃস্থ ও মেধাবী ১৬০ জন পড়ুয়ার কঠিন লড়াইয়ের সঙ্গী হতে, শনিবার পড়ন্ত বেলায় জেলা শহর মেদিনীপুরের কলেজ কলেজিয়েট মাঠে অনুষ্ঠিত ‘বইমেলা’ প্রাঙ্গণে তাঁদের সাথে ‘আলাপচারিতা’-য় মেতে ওঠেন পশ্চিম মেদিনীপুরের SP (জেলা পুলিশ সুপার) ধৃতিমান সরকার। উচ্চশিক্ষায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার সাথে সাথে, মন দিয়ে শোনেন তাঁদের নানা সমস্যার কথাও। যেকোনো প্রয়োজনে তাঁদের উদ্দেশ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তরুণ এই IPS অফিসার।
জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত বিভিন্ন এলাকার দুঃস্থ ও মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করা এবং পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সহযোগিতার বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক অনন্য উদ্যোগ এই ‘আলাপচারিতা’। সরকারি উদ্যোগে জেলা শহর মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক কলেজ কলেজিয়েট মাঠে অনুষ্ঠিত ‘বইমেলা’ প্রাঙ্গণকেই এজন্য বেছে নেওয়া হয় বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ITI সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ১৬০ জন পড়ুয়ার সঙ্গে ‘আলাপচারিতা’ ছাড়াও জেলা পুলিশের তরফে তাঁদের হাতে বই কেনার জন্য ২ হাজার টাকার একটি কুপনও তুলে দেওয়া হয়।
“এই কুপনের সাহায্যে জ্ঞান আহরণের জন্য মেদিনীপুর বইমেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের বই কিনতে পারবেন পড়ুয়ারা”, এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তাঁর বার্তা, “আমাদের রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় দুঃস্থ ও মেধাবী পড়ুয়াদের যেকোন প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত। আমরাও তাই জেলার ১৬০ জন পড়ুয়ার নানা ধরনের সমস্যার কথা আজ শুনলাম। সেই অনুযায়ী তাঁদের সহযোগিতা করা হবে। আমরা যে সবসময় তাঁদের পাশে আছি, এই বার্তা দিতেই রাজ্য পুলিশের পরামর্শে এবং জেলা পুলিশের উদ্যোগে এই ‘আলাপচারিতা’র আয়োজন।”