দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ আগস্ট: আর জি কর মেডিক্যালের নির্মম ও পাশবিক হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গোটা রাজ্য। প্রতিবাদের ঢেউ রাজ্য ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তেও। এই প্রতিবাদ-আন্দোলনের সিংহভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন কলেজ-ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া থেকে বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত তরুণ-তরুণীরা। অবশ্য তাঁদের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন আট থেকে আশি সকলেই। প্রতিবাদের আঁচ কলেজ-ইউনিভার্সিটির গন্ডী ছাড়িয়ে ক্রমেই পৌঁছে যাচ্ছিল রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলেও। পিছিয়ে ছিলো না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুলও। বিদ্যালয় ছুটির পর প্রতিবাদী মিছিল বা পদযাত্রায় হেঁটেছে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। অবশ্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্যোগ নিয়েছে পড়ুয়ারাই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ‘প্রতিবাদের ঢেউ’ রুখে দিতে উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা দপ্তর।

thebengalpost.net
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের নির্দেশিকা:

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডিআই (সেকেন্ডারি) বা বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বপন কুমার সামন্ত স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসে। সেই নির্দেশিকাতে জেলার সমস্ত জুনিয়র হাই স্কুল, হাই স্কুল ও হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের প্রধানদের স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- শিক্ষা দপ্তর নির্দেশিত কর্মসূচি ছাড়া, স্কুল ক্যাম্পাসের বাইরে ছাত্র-ছাত্রীরা অন্য কোন কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে না। এই বিষয়টি প্রধান শিক্ষকদের নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে ডিআই স্বাক্ষরিত নির্দেশিকাতে। ফলে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ছাত্র-ছাত্রীরা যে আর “আমার দিদির বিচার চাই” স্লোগান তুলে পথে নামতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য! এই বিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি। তবে, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার এন্ড হেডমিস্ট্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সভাপতি তথা ভাদুতলা বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. অমিতেশ চৌধুরী বলেন, “স্কুল আওয়ারে বা স্কুল চলাকালীন এই ধরনের কোন কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার বিষয়টি প্রধান শিক্ষকদের নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।” কিন্তু, স্কুল ছুটির পর যদি ছাত্র-ছাত্রীরা মিছিল করে? ওই সংগঠনের (ASFHM) তরফে বলা হয়, “সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের কিছু করার নেই!” এই বিষয়ে ABTA সহ বিভিন্ন বাম শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তোলা শুরু করেছেন, “নগর পুড়িলে কভু কি দেবালয় এড়ায়? ছাত্র-ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত এই প্রতিবাদ কিভাবে রুখবে শিক্ষা দপ্তর?”