মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জুন: অঙ্কে ১০০। পদার্থ বিজ্ঞান বা ভৌত বিজ্ঞানে ৯৫। জীবন বিজ্ঞানে ৯৭। সবমিলিয়ে ৯৩ শতাংশ নম্বর। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhyamik Examination) ৬৫০ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে শাশ্বতী ঘোষ। দু’চোখে স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু, বাধা আর্থিক অনটন। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের প্রত্যন্ত মৌপাল এলাকায় বাড়ি শাশ্বতী’র। স্থানীয় মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠেই পড়াশোনা করেছে সে। রেজাল্ট বেরোনোর পর অকপটে স্বীকার করেছে শাশ্বতী, “এই স্কুলের জন্য-ই আমি এই নম্বর পেয়েছি। শুধু আমি নই, আজ স্কুলের যে রেজাল্ট হয়েছে, তাতে সবথেকে বেশি অবদান স্কুলের শিক্ষকদের-ই। স্বয়ং প্রধান শিক্ষক সহ সকল শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের পাশে না থাকলে, জঙ্গলমহলের এই এলাকায় থেকে, অতিমারীর সেই ভয়াবহ সময় পেরিয়ে আজ আমরা এই রেজাল্ট করতে পারতাম না।” শাশ্বতী যোগ করে, “সেভাবে টিউশন পাইনি। স্কুলের শিক্ষকরা অতিমারীর সময়েও সাহায্য করেছেন। এমনকি এই এলাকায় বাল্যবিবাহ রোধেও আমাদের প্রধান শিক্ষক ড. প্রসূন কুমার পড়িয়া এগিয়ে না এলে, আমাদের অনেক বান্ধবীদের হয়তো এতদিনে বিয়ে হয়ে যেত।”
উল্লেখ্য যে, শালবনী ব্লকের এই মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠ (উচ্চ মাধ্যমিক) থেকে এবার ১৭২ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক দিয়েছিল। ছাত্র ৮৭ জন এবং ছাত্রী ৮৫ জন। পাস করেছে ১৪৫ জন। ১৫ জন প্রথম বিভাগে পাস করেছে। ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ৪ জন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে শাশ্বতী (৬৫০)। শাশ্বতী-কে নিয়ে গর্ব করলেও, আফশোস ও হতাশও ধরা পড়েছে প্রধান শিক্ষক ড. প্রসূন কুমার পড়িয়া’র কন্ঠে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি আমাদের জানিয়েছেন, “মেয়েটি অত্যন্ত মেধাবী ও মনোযোগী। আমরা আশা করেছিলাম অন্তত ৬৬৫-৬৭০ পাবেই। ইতিহাস (৮২) বিষয়টাতে নম্বর-টা একটু কমে গেল! ভূগোল ও ইংরেজি-তেও ২-৩ নম্বর করে বেশি হলে ভালো হত। যাই হোক, পারিবারিক অভাব-অনটন উপেক্ষা করে ও পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। আমরা যথাসাধ্য সাহায্য করেছি। ওর দাদাও রসায়ন নিয়ে কলেজে পড়ছে।” জানা গেছে, শাশ্বতী’র বাবা তারাশঙ্কর ঘোষ গ্রামেরই একজন গ্রামীণ চিকিৎসক। সেভাবে পসার নেই। মা একটি প্রাইভেট নার্সারি স্কুলে পড়ান। মাস গেলে ২০০০ টাকা পান। তার মধ্যেই শাশ্বতী’র দাদা কলেজে পড়াশোনা করছে। শাশ্বতী-ও চায় একজন সুচিকিৎসক হয়ে উঠতে। মেধা থাকলেও বাবা পারেননি! বাবা’র আর নিজের স্বপ্নপূরণ করতে শাশ্বতী MBBS পড়তে চায়। তার আগে, নিট (NEET) পরীক্ষায় সফল হতে হবে। ভালো কোচিং বা প্রশিক্ষণ ছাড়া যে সর্বভারতীয় এই পরীক্ষায় সফল হওয়া খুব কঠিন, তা জানে শাশ্বতী। জানেন স্কুলের শিক্ষকরাও। তাঁরা যথাসাধ্য সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। আপাতত, সেই স্কুলের সাহায্য নিয়েই আরও একবার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে চায় শাশ্বতী।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…