মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ মে: মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নয় (৯) কৃতী পড়ুয়া জায়গা করে নিয়েছে। পরীক্ষার্থী সংখ্যা এবং পাশের সংখ্যায় এবার ছাত্রীরা (ছাত্রদের) টেক্কা দিলেও (রাজ্যে এবং জেলায়), পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একমাত্র ছাত্রী হিসেবে মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছে বৈতা মহেন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের সংহিতা দাস। মেধা তালিকায় জায়গা পাওয়া বাকি ৮ জনই ছাত্র। মোহনপুর ব্লকের বৈতা এলাকারই বাসিন্দা সংহিতা ৬৮৪ নম্বর পেয়ে নবম স্থান অধিকার করেছে। স্বাভাবিকভাবেই, জেলায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থানে সংহিতাই। সংহিতা’র সাফল্যে গর্বিত তার বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজন সহ এলাকাবাসী। আপ্লুত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।
সংহিতা’র বাবা দেবব্রত দাস স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মা যূথী রানী দাসও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাঁদের দুই ছেলে-মেয়ে’র মধ্যে সংহিতা-ই বড়। সংহিতা’র ভাই পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। সংহিতা’র বাবা দেবব্রত দাস বৈতা মহেন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের-ই ছাত্র ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কলকাতার বিখ্যাত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে রসায়নে (Chemistry) স্নাতক পাস করেছেন। করেছেন বি.এড এবং পরবর্তী সময়ে ডি.এল.এড। একটা সময় রসায়নের প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন পড়াতেন দেবব্রত বাবু। বৈতা এলাকায় রসায়নের শিক্ষক হিসেবে এক নামে সকলেই চেনেন তাঁকে। তবে, গত কয়েক বছর আগেই তিনি গৃহ-শিক্ষকতা ছেড়েছেন। দেবব্রত বাবু বলেন, “প্রথম যখন এই সংক্রান্ত সরকারি বিধি এসে পৌঁছয় ডি.আই অফিসে, সেই সময় থেকেই গৃহ শিক্ষকতা ছেড়েছি।” তবে, মন-প্রাণ দিয়ে নিজের ছেলে-মেয়েদের মানুষ করছেন দেবব্রত বাবু। শুধু তাই নয়, বৈতা বাজারে অবস্থিত সারদা শিশু মন্দিরের পরিচালন সমিতিরও অন্যতম সদস্য তিনি। সংঘের অধীনে থাকা একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত এই স্কুলই যে মেধাবী সংহিতা’র সাফল্যর ভিত গড়ে দিয়েছে তাও একবাক্যে স্বীকার করেন দেবব্রত দাস। তিনি বলেন, “গত এক দশকের বেশি সময় ধরে সাফল্যের সাথে এগিয়ে চলেছে আমাদের সকলের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ওই স্কুল। সংহিতা প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে পঞ্চম শ্রেণী অবধি ওই স্কুলেই পড়েছে। ওরাই প্রথম ব্যাচ। হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আর প্রাক প্রাথমিক স্তরের দু’টি ক্লাস দিয়ে ওই স্কুল শুরু করা হয়েছিল। এখন সেখানে ৫০০’র বেশি ছাত্র-ছাত্রী। আমার ছেলেও ওই স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে।”
উল্লেখ্য যে, সারদা শিশু মন্দিরের সেই ‘কিশলয়’ শ্রেণী থেকে বৈতা মহেন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণী পর্যন্ত সংহিতা কখনও ক্লাসে ‘দ্বিতীয়’ হয়নি (‘প্রথম’ ছাড়া)! মাধ্যমিকেও শুধু নিজের স্কুল নয়, জেলার মেয়েদের মধ্যেও প্রথম সংহিতা। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় সে। নিজের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে সংহিতা প্রথমেই স্মরণ করে সারদা শিশু মন্দিরের আচার্য-আচার্যাদের অবদানের কথা। সংহিতা বলে, “আমার স্কুল অর্থাৎ বৈতা মহেন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাড়াও আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা-মা এবং সারদা শিশু মন্দিরের আচার্য-আচার্যাদের অবদান অনস্বীকার্য।” উল্লেখ্য যে, মেদিনীপুর শহরের যমুনাবালীতে অবস্থিত ওই একই সংস্থা পরিচালিত (সংঘের অধীনে থাকা) সারদা বিদ্যামন্দিরের চারজন শিক্ষার্থী এবার মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। বৈতা বাজারে অবস্থিত স্কুলটিতে অবশ্য পঞ্চম শ্রেণী অবধি পড়ানো হয়। তবে, শৈশবেই গড়ে দেওয়া শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যাবসায় এবং অনুশাসনের ভিত যে ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা জানাচ্ছেন স্বয়ং সংহিতা এবং তার বাবা-মা’ও। পড়াশোনার বাইরে সংহিতা গান করে এবং ভালোবাসে ক্রিকেট খেলা দেখতে। প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। সংহিতা’র প্রিয় দুই ক্রিকেটারের আকাশ ছোঁয়া সাফল্যের পেছনেও যে পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর নিয়মানুবর্তিতার অবদান অনস্বীকার্য, তা মানছেন সকলেই!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…