দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ এপ্রিল: দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ বা ডিপিএসসি-র তরফে জারি করা হল বিজ্ঞপ্তি। সংসদ বা ডিপিএসসি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য যোগ্যতার ন্যূনতম যে মাপকাঠি বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা হলো- ১) ২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর অথবা তার আগে নিযুক্ত শিক্ষকের মাধ্যমিক পাস এবং ১ বছর বা ২ বছরের শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ (JBT/PTTI/D.EL.ED) থাকতে হবে। ২) ২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের পর থেকে ২০০৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিযুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও যোগ্যতার মাপকাঠি একই। ৩) ২০০৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে আজ পর্যন্ত নিযুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই যোগ্যতার মাপকাঠি হল, উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর অথবা স্নাতক এবং দু’বছরের ডি.এল.এড বা পিটিটিআই প্রশিক্ষণ (D.EL.ED/2yrs PTTI)। ৪) স্পেশাল ডি.এড, স্পেশাল বি.এড বা সাধারণ বি.এড করা থাকলে ৬ মাসের ব্রিজ কোর্স সম্পূর্ণ থাকতে হবে।

আগামী ১৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে যোগ্য এবং ইচ্ছুক শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবেদন জানাতে পারবেন। সংসদ প্রদত্ত নির্দিষ্ট বয়ান বা ফরমেটে আবেদন জানাতে হবে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বা এস.আই (SI/S)-র কার্যালয়ে। অন্য কোথাও আবেদন জানালে তা গৃহীত হবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছে সংসদ। নিয়োগে সিনিয়রিটি বা অভিজ্ঞতাকেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান অনিমেষ দে। হবেনা কোনও ইন্টারভিউ। সেলফ অ্যাসেসমেন্ট বা স্ব-মূল্যায়নে (self appraisal/ self assessment) ৩০ নম্বর থাকবে। এই নিয়োগ হবে সার্কেল বা চক্র অনুযায়ী অর্থাৎ শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের সার্কেলেই প্রধান শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষিকা হতে পারবেন। জেলায় মোট শূন্যপদ প্রায় আড়াই হাজার বলেও সংসদ সূত্রে জানা গেছে। চেয়ারম্যান অনিমেষ দে বলেন, “স্বচ্ছতার সাথে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আমাদের লক্ষ্য।” শাসকদলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা (মেদিনীপুর) সভাপতি অখিলবন্ধু মহাপাত্র বলেন, “২০০৮ সালের পর এই প্রথম জেলায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে। ফলে খুশির হওয়া শিক্ষক মহলে। এর ফলে স্কুলগুলি আরো সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে বলেই আমরা আশাবাদী।” বাম শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক সন্দীপ ঘোষ বলেন, “আশা করব, রাজনৈতিক আনুগত্য নয়, যোগ্যতার মাপকাঠিতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।”
অপরদিকে, ‘মর্নিং স্কুল’ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেও পিছিয়ে এলো পশ্চিম মেদিনীপুর DPSC। গত ২৫ মার্চ ডিপিএসসি-র তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, ১৬ এপ্রিল থেকে জেলার সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি মর্নিং সেশনে বা প্রাতঃবিভাগে অনুষ্ঠিত হবে। তবে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ বা ডিপিএসসি-র তরফে নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়, “মর্নিং স্কুল সংক্রান্ত গত ২৫ মার্চের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হলো। পরবর্তী নির্দেশিকা দেওয়ার আগে অবধি স্কুলগুলি ‘দিবা বিভাগে’ যেমন চলছে তেমনই চলবে।” শুক্রবার সন্ধ্যায় এই বিষয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ বা ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান অনিমেষ দে জানান, “পর্ষদের কাছ থেকে নতুন নির্দেশিকা আসার আগে পর্যন্ত দিবা বিভাগেই স্কুলগুলি পরিচালিত হবে। এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা এলে আমরা জানিয়ে দেব।”