দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ জুন: খ্রিস্টান সার্ভিস সোসাইটি পরিচালিত পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী ব্লকের ভীমপুর সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভীমপুর এবিএম গার্লস হাই স্কুলে অবৈধ উপায়ে বা বেআইনিভাবে ২৪ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগের মামলায় ধৃত (৩০ এপ্রিল, ২০২৪) ও জেল হেফাজতে থাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন DI (প্রাক্তন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক) চাপেশ্বর সর্দার-কে শুক্রবার (২১ জুন) ফের মেদিনীপুর জেলা আদালতে তোলা হয় শালবনী থানার তরফে। যথারীতি তাঁর আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। তবে, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভুয়ো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগের এই মামলায় জেলা আদালতের বিচারক উদয় রানা তাঁর জামিন নাকচ (বা, নামঞ্জুর) করে পুনরায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান।
একইসঙ্গে এদিনের শুনানিতে সরকারি আইনজীবী শঙ্কর প্রসাদ বাগচী বিচারকের সামনে তুলে ধরেন, অন্তত ২০টি উপায়ে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা লুটেছেন খ্রিস্টান সার্ভিস সোসাইটির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর প্রলয় কুমার শিট, প্রভঞ্জন শিট (প্রলয় কুমার শিটের বাবা চুরুট নামে পরিচিত), ড্যানিয়েল দাস, মধ্যস্থতাকারী (দালাল) সঞ্জীব মাইতি, প্রাক্তন ডিআই চাপেশ্বর সর্দার সহ ডিআই অফিসের (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা ভবনের) বেশ কিছু অসাধু কর্মী ও আধিকারিকরা। ভুয়ো অ্যাপ্রুভাল থেকে ভুয়ো রেজিস্টার তৈরী, ডিআই অফিসের i-OSMS পাসওয়ার্ড চুরি করে বেতন দেওয়া প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরা হয় শুক্রবারের শুনানিতে। প্রায় ৩ কোটি টাকার ‘অবৈধ’ আর্থিক লেনদেন (Money laundering)-র বিষয়ও উঠে আসে সরকারি আইনজীবীর সওয়ালে। সব শুনে রীতিমত ‘মাথায় হাত’ পড়ে যায় বিচারকের! তিনি এই মামলার মূল অভিযুক্তদের (‘মেন কালপ্রিট’) বিষয়ে জানতে চাইলে, চাপেশ্বর সর্দারের আইনজীবী এবং সরকারি আইনজীবী উভয়ই বলেন, তাঁরা হাইকোর্ট থেকে ‘রক্ষাকবচ’ নিয়ে রেখেছেন! এই বিষয়ে বিচারক পরবর্তী পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে চাপেশ্বর সর্দার-কে চরম ভর্ৎসনা করেন এবং পুনরায় জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের খামারচক হাই স্কুলে ‘ভুয়ো’ জাতিগত শংসাপত্রের ভিত্তিতে তথা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে একজন কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে সেইসময় (২০১৮ সালে) ডিআই পদে থাকা চাপেশ্বর সর্দার-কে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি (CID)। এরপর, গত ৩০ এপ্রিল (২০২৪) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের ভীমপুরে অবস্থিত ভীমপুর সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভীমপুর এবিএম গার্লস হাই স্কুলে ‘অবৈধভাবে’ প্রায় ২৪ জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ঘটনায় (‘ভুয়ো’ নিয়োগে অ্যাপ্রুভাল বা অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগে) তাঁকে গ্রেফতার (সোন অ্যারেস্ট/Shown Arrest) করল শালবনী থানা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।