দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, সায়ক পন্ডা, ৪ ডিসেম্বর: ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। আইএমডি (IMD- Indian Metrological Department)’র সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, আপাতত পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। এদিকে, মৌসম বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, শনিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে ক্রমশ সরতে শুরু করবে। পাশাপাশি, ওডিশা উপকূল হয়ে আগামী রবিবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি পুরী উপকূলে প্রবেশ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী, বিশাখাপত্তনমের দক্ষিণ পূর্ব অংশ থেকে ২৩০ কিমি দূরে এবং পুরীর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ থেকে ৪১৫ কিমি দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। পাশাপাশি, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম পারাদ্বীপ থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়৷ এদিকে, জাওয়াদের অভিমুখ বাংলার দিকেই হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই, দক্ষিণবঙ্গ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রবিবার রয়েছে ঝড়ের পূর্বাভাসও। যার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার৷

thebengalpost.net
দীঘায় এনডিআরএফ :

এদিকে, শনিবার সকাল থেকেই দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি মাঝারি বা ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা, হাওড়া এবং হুগলিতে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্যকে মাথায় রেখে আজ থেকেই রাজ্যে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের হেল্পলাইন নম্বর- ৮৯০০৭৯৩৫০৩, ৮৯০০৭৯৩৫০৪ এবং সিইএসসির হেল্পলাইন নম্বর- ৯৮৩১০৭৯৬৬৬, ৯৮৩১০৮৩৭০০। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ২৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। পাশাপাশি, দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হবে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি।

thebengalpost.net
বৃষ্টি শুরু মেদিনীপুর খড়্গপুর ঝাড়গ্রামে :

অন্যদিকে, ভোর রাত থেকেই নিম্নচাপের একঘেঁয়ে বৃষ্টিতে মেদিনীপুর, খড়্গপুর, ঝাড়গ্রামের নাজেহাল অবস্থা। মুখভার দীঘার! পর্যটকরা সৈকতের কাছাকাছি গেলেও, সমুদ্রে নামা নিষেধ। এর সঙ্গে রয়েছে ভরা কোটালের আশঙ্কা! সব মিলিয়ে থমথমে অবস্থা দীঘার। প্রস্তুত রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। সারা রাজ্যে ৪৯ টি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এনডিআরএফ (NDRF) ও এসডিআরএফ (SDRF) একযোগে নামতে প্রস্তুত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২ টি এনডিআরএফ বাহিনী জেলায় পৌঁছেছে। একটি পাঠানো হয়েছে ঘাটাল মহকুমার। অন্যটি খড়্গপুর মহাকুমার খাকুড়দায় আছে। রাজ্যের জল সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া জানিয়েছেন, “বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশাসন সব রকম ভাবে প্রস্তুত আছে।” জানা গেছে, আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার পরিমাণ বাড়বে। তবে, এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ড ফল হবে না বলে বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে আবহাওয়া দপ্তর মনে করছে। ওড়িশা থেকে পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছনোর পথে (রবিবার), ঘূর্ণিঝড় অনেকটাই শক্তি হারাবে বলে মনে করা হচ্ছে! আপাতত আশা-আশঙ্কার মধ্যেই বিপর্যয়ের প্রহর গুনছেন সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনের আধিকারিকরা।

thebengalpost.net
থমথমে দীঘা (ছবি- Digha Page) :

thebengalpost.net
পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌঁছল NDRF বাহিনী :