দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ মার্চ: পোশাকি নাম ‘গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র’ বা কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট (CSP/Customer Service Point)। ব্যাঙ্ক দূরে হলে, এই ধরনের সেন্টার থেকেই পরিষেবা গ্রহণ করেন প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাহকরা। গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা ব্যাঙ্কের মতোই ভরসা করেন এই সিএসপি সেন্টারকে। সেই বিশ্বাসের মর্যাদা না দিয়ে, অসহায় মানুষকে ঠকানোর অভিযোগ উঠলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনিও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অনুমতি বা লাইসেন্স নিয়ে সিএসপি সেন্টার খুলেছিলেন নিজের এলাকায়। কিন্তু, তার আড়ালে গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষদের ঠকানোর কারবার করে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। শনিবার নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করেছে শালবনী থানার পুলিশ। ঘটনাটি শালবনী ব্লকের গোদাপিয়াশাল এলাকার। ধৃত যুবকের নাম কুশ মন্ডল। গ্রামের এক মহিলার ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তাকে। যদিও, এলাকাবাসীর অভিযোগ আরো অনেকের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই যুবক। দাবি সঠিকভাবে তদন্ত করুক পুলিশ।
প্রসঙ্গত, শালবনী ব্লকের গোদাপিয়াশাল এলাকার বাসিন্দা কুশ মন্ডল নামে বছর ৩০ এর ওই যুবক গোদাপিয়াশাল বাজার এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সিএসপি (Customer Service Point) সেন্টার পরিচালনা করত। বছর দুয়েক আগে ওই এলাকারই অঞ্জলি সিং নামে এক মহিলা ওই সিএসপি সেন্টারে গিয়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফিক্স ডিপোজিট করতে বলেন সেন্টারের মালিক কুশ মন্ডলকে। কিছুক্ষণ পর কুশ তাঁকে জানায়, ‘হয়ে গেছে’। নিশ্চিন্তে বাড়ি চলে আসেন ওই মহিলা। এরপর, ২-৩ দিন আগে নিজের পাস বই আপডেট করতে গিয়ে মহিলা জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা পড়েনি বা তাঁর কোনো ফিক্সড ডিপোজিট নেই। এরপরই, এলাকাবাসীর সাহায্যে অসহায় ওই মহিলা শনিবার সকালে শালবনী থানার দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ বা FIR দায়ের করেন কুশ মন্ডলের বিরুদ্ধে। এরপরই, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান শালবনী থানার পুলিশ আধিকারিকরা। সকাল ১০ টা নাগাদ ওই যুবককে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। মেদিনীপুর আদালতে তোলা হলে, পুলিশ ওই যুবককে ৯ দিনের হেফাজতের জন্য আবেদন করেন। বিচারক ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত (pc/police remand) মঞ্জুর করেন। এদিকে, ওই এলাকার অন্যান্য অনেকেরই অভিযোগ, আরও অনেকের টাকা এভাবেই আত্মসাৎ করেছেন ওই যুবক। সবমিলিয়ে প্রায় ১০-১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনেছেন তাঁরা। যদিও, বাকিরা এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে, খুব শীঘ্রই তাঁরা অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে, ধৃত যুবককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।