দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ এপ্রিল: সত্যিই কি এগিয়েছে এই সমাজ-সভ্যতা? নাকি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনও তার প্রগাঢ় অন্ধকারের‌ প্রচ্ছায়া! এই একবিংশ শতকেও তাই জাতপাত, বর্ণবিদ্বেষ- এর কুৎসিত বীভৎসতা ঘিরে রেখেছে এই সমাজকে! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আনন্দপুর থানার মহারাজপুরের ঘটনা সেই বিষয়টিকেই আবারো একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সোমবার (৪ এপ্রিল) বিউটি দোলই (নায়ক) নামে বছর কুড়ির এক গৃহবধূ-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিউটি’র পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে। তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুর থানা।

thebengalpost.net
বিউটি দোলই :

জানা গিয়েছে, বছর ২০’র বিউটি’র সাথে বছর খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল আনন্দপুর থানার মহারাজপুরের বাসিন্দা শুভজিৎ নায়কের। প্রেম করে বিয়ে বলেই জানা গেছে। স্বামীর ভালোবাসার কোনো অভাবও ছিলনা! তবে, বিয়ের পর থেকেই শশুর, শাশুড়ি থেকে শুরু করে শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরা জাতপাত তুলে গঞ্জনা দিত বিউটি-কে। শুধু তাই নয়, পণের দাবিও করা হতো। বিউটি’র বাবা সজল দোলইয়ের অভিযোগ, বিয়ের সময় ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরও পণের দাবি করতেন শ্বশুর শাশুড়ি। অনগ্রসর শ্রেণীর হওয়ায়, জাতপাত তুলে গঞ্জনাও দেওয়া হতো। তবে, জামাই এর বিরুদ্ধে তাঁর কোন অভিযোগ নেই। সোমবার বিউটি’র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায়, শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইলেও তাঁর অভিযোগ, জামাইয়ের অনুপস্থিতিতে শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরা বিউটিকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। বিউটি’র স্বামী শুভজিৎ-ও নাকি পরোক্ষে তা সমর্থন করেছেন। এমনকি, বিউটি নাকি তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল বলেও জানা গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ ইতিমধ্যে শ্বশুর চিত্ত নায়ক এবং শাশুড়ি ঝর্ণা নায়ক-কে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার তাঁদের মেদিনীপুর আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।