দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুলাই: প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও কি এবার সিরিয়াল, শর্ট ফিল্ম, ওয়েব সিরিজের প্রভাব পড়া শুরু হয়ে গেল? পশ্চিম মেদিনীপুরের এদিনের ঘটনা যেন সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। একেবারে টানটান ক্রাইম থ্রিলার! স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাদ বা মনকষাকষি বা অশান্তির বদলা নিতে, বন্ধুকে কাজে লাগালেন স্বামী। স্ত্রী-কে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, অচৈতন্য করে, বন্ধুকে দিয়ে ধর্ষণ করানোর চেষ্টা করলেন স্বামী। শুধু তাই নয়, সেই দৃশ্য মোবাইলে রেকর্ডিংও করলেন তিনি। এরপরই, স্ত্রীর ঘুমের ঘোর কিছুটা কাটতেই ঠেলে সরিয়ে দেন অচেনা ওই যুবককে! তারপর থেকেই বেপাত্তা ওই যুবক। তবে, স্ত্রী’র লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গুণধর স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার সাদাতপুর পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত গোকুলপুর এলাকায়। জানা যায়, ওই দম্পতির দুটি ছোট সন্তান-ও রয়েছে। পেশায় সবজি বিক্রেতা অভিযুক্ত স্বামী তাদের সকলকেই শুক্রবার ১১ টা – সাড়ে ১১ নাগাদ ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। তারপর, বন্ধুকে ডেকে আনে। তারপর-ই একেবারে সিনেমা’র মতো ঘটনা! যদিও, গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোক স্বামীর এই কীর্তির কথা স্বীকার তো করেইনি, উল্টে মারধর করেছে বলে অভিযোগ ওই মহিলার।
শনিবার দুপুরে নিজের বাবা-কে সঙ্গে নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাতে এসে, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, ক্ষোভ আর যন্ত্রণার কথা উগরে দেন ওই মহিলা। তাঁর মতে, “আমাকে বদনাম দিয়ে, বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্যই এই কান্ড করেছে মনে হয়।” জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন কারণে অশান্তি চলছিল। স্ত্রীর উপর স্বামী প্রায়শই অত্যাচার করত বলে অভিযোগ। ওই গৃহবধূ এর আগে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ-ও করেছিল বলে জানা যায়। বিষয়টি মিটমাট করার জন্য বেশ কয়েকবার পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপও করতে হয়েছে বলে জানা যায়। মনে করা হচ্ছে, সকলের কাছে গৃহবধূ-কেই দোষী সাব্যস্ত করার জন্য হয়তো অভিযুক্ত ওই স্বামী এই পরিকল্পনা করেছিল। তবে, এই ঘৃণ্য ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বছর ৩৫ এর ওই গৃহবধূ এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন। শনিবার তাঁরা খড়্গপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত সাদাতপুর পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর, শনিবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পলাতক বন্ধুর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। (মহিলার সামাজিক নিরাপত্তার কারণে স্বামী সহ পরিবারের কারুর নাম প্রকাশ করা হলোনা।)