দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ১৪ মে:কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। জামিনের শর্ত হিসাবে আদালত জানিয়েছে, লালাকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। থাকতে হবে জঙ্গলমহলের (পুরুলিয়ার) বাড়িতেই। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আগামী সোমবার (২১ মে) কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠন করতে হবে সিবিআই-কে। তার পরই এই মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া বা ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা। বিশেষ আদালতের নির্দেশ, মামলার শুনানির দিনগুলিতে সশরীরে কোর্টে হাজিরা দিতে হবে লালাকে। উল্লেখ্য যে, আজ, মঙ্গলবার সকালেই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন লালা।

thebengalpost.net
লালার আত্মসমর্পণ:

প্রসঙ্গত, লালাকে ‘রক্ষাকবচ’ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। তবে, নিম্ন আদালতের নির্দেশে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে সিবিআই। এদিকে, কয়লা পাচার মামলায় চার্জ গঠন করে তদন্ত শেষ করার জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। আগামী ২১ মে এই মামলায় চার্জশিট পেশ করার কথা সিবিআইয়ের। আদালতে সিবিআই প্রশ্ন তোলে যে, লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ না করা হলে কী ভাবে কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠন করা সম্ভব? বিচারক সিবিআইয়ের উদ্দেশে জানান, লালা গ্রেফতারির ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ পেলেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে কোনও বাধা নেই! আদালতের জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত নির্দেশ পাওয়ার পরেই লালার খোঁজে অভিযান শুরু করে সিবিআই। যদিও লালার বাড়ি গিয়ে তাঁর খোঁজ পাননি তদন্তকারীরা।

অবশেষে, সোমবার (১৩ মে) আসালসোল লোকসভা কেন্দ্রের ভোট মেটার পরের দিনই (মঙ্গলবার সকালে) সেখানকার বিশেষ সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন লালা। মঙ্গলবারের শুনানিতে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক মামলার তদন্তে সিবিআই-র ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিন বছর ধরে লালা সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ নিয়ে থাকলেও, কেন সিবিআই তার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। লালাকে জামিন দিলেও, তাঁকে নিজের পৈতৃক বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া থানা এলাকার অন্তর্গত ভামোরিয়া গ্রামে লালার পৈতৃক বাড়ি। সেখানেই থাকেন তাঁর মা। এখন তাঁকে ওই ঠিকানাতেই থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের অনুমতি ছাড়া এলাকা ছাড়তে পারবেন না লালা। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই কয়লা পাচার মামলায় দু’টি চার্জশিট পেশ হয়েছে। তবে এখনও চার্জ গঠন হয়নি। এই মামলার আর এক অভিযুক্ত হলেন বিনয় মিশ্র। তবে এখনও তাঁর খোঁজ পাননি তদন্তকারীরা। তিনি ‘নিরুদ্দেশ’! চার্জ গঠনের দিন বিনয় হাজির না হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আদালত। ২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। লালার সঙ্গী বলে পরিচিত গুরুপদ মাজি-সহ চার জন গ্রেফতার হন। তিন জন জামিন পেলেও গুরুপদ এখনও দিল্লির তিহার জেলে বন্দী।

thebengalpost.net
অনুপ মাঝি (ফাইল ছবি, সংগৃহীত):