দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ জুলাই : বিনামূল্যের ভ্যাকসিন, লাইনে দাঁড়ানোর জন্য দিতে হচ্ছে টাকা! আর, টাকা দিতে না পারলে, রাতভোর জেগেও ফিরে যেতে হচ্ছে। প্রশাসনের সতর্কবার্তা এবং অভিযান উপেক্ষা করেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কোথাও কোথাও এখনও চলছে এই “দালালরাজ”! সম্প্রতি, জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের একটি উচ্চ পর্যায়ের জল জেলা শহর মেদিনীপুরের কেরানীটোলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে এই দালাল-রাজ বন্ধ করলেও, মাত্র ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে অবস্থিত বেড়বল্লভপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেই একই চিত্র উঠে এলো বুধবার সকালে। তবে, অভিযানের ফলে টাকার অংক সামান্য কমেছে! আগে ছিলো, ৫০০-৬০০ টাকা, এখন হয়েছে ২০০-৩০০ টাকা। মঙ্গলবার রাতে দালালদের যারা এই টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা বুধবার সকালে ভ্যাকসিনের কুপন পেলেন, অপরদিকে যে সকল ৪৫ উর্ধ্ব অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা টাকা না দিয়েই কাকভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁদের হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হলো! উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক যথাক্রমে সুদীপ সরকার ও পীনাকী রঞ্জন প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষের নেতৃত্বে বড়োসড়ো অভিযান চালানো হয়েছিল কেরানীটোলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। তারপর, কিছু কিছু জায়গায় অবশ্য বন্ধ হয়েছে এই দালাল চক্র। শালবনীর মতো বিভিন্ন জায়গায় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, “আগে থেকে কোনো লাইন বা ইঁট পাটকেল বরদাস্ত করা হবেনা। সকালে এসে লাইন দিতে হবে। যিনি লাইনে দাঁড়াবেন, তাঁর হাতেই একটি কুপন দেওয়া হবে।” কিন্তু, সমস্ত জায়গায় এই নিয়ম না হওয়ার ফলে, এখনো ভুগতে হচ্ছে অসহায় সাধারণ মানুষদের।

thebengalpost.in
সম্প্রতি অভিযান চালানো হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে :

thebengalpost.in
তারপরেও মেদিনীপুর শহরে সক্রিয় দালালচক্র :

অপরদিকে, গত ৪৮ ঘন্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমণের হার আরও নিম্নমুখী হলো! সোমবার ও মঙ্গলবারের জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে- ১৩ জন ও ১৮ জন। মাত্র ৩১ জন সংক্রমিত হলেও, মৃত্যুর সংখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে, রাজ্যের বুলেটিন বলছে, গত ৪৮ ঘন্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এদিকে, সোমবার (১১ জুলাই) এর রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন মাত্র ১৩ জন। এর মধ্যে মেদিনীপুর শহরের বিধাননগর, মহতাবপুর ও পালবাড়িতে ১ জন সহ মোট ৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। খড়্গপুর গ্রামীণের কলাইকুন্ডাতে ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর ও ধরমপুরে ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। সবংয়ের মারকন্ডচকে (১৩ নং বিষ্ণুপুর) ১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ঘাটাল মহকুমার ক্ষীরপাইতে ১ জন, চন্দ্রকোনায় ২ জন ও খুকুড়দহে (দাসপুর-২) ১ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন সোমবার (১১ জুলাই) এর রিপোর্ট অনুযায়ী। অন্যদিকে, মঙ্গলবার (১২ জুলাই) এর রিপোর্ট অনুযায়ী জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ জন। এর মধ্যে মেদিনীপুর শহরের মিত্র কম্পাউন্ডে একই পরিবারের ২ জন এবং শরৎপল্লী’তে ১ জন সহ মোট ৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। খড়্গপুরে ৫ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এর মধ্যে, গ্রামীণের বড় মাহমুদপুরে ২ জন ও চাঁদাবিলাতে ১ জন সহ মোট ৩ জন এবং রেল সূত্রে ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। বেলদাতে ১ জন, দাঁতনের জলগোড়াতে ১ জন এবং পিংলাতে ২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়। এছাড়াও, গোয়ালতোড়ের দুবরাজপুরে ১ জন ও কেশপুরে ১ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে গত চব্বিশ ঘণ্টায়। অপরদিকে, ঘাটাল মহকুমায় ৩ জন (চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই, দাসপুর) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন গত চব্বিশ ঘণ্টায়।

thebengalpost.in
শালবনীতে লাইন দিয়ে ভ্যাকসিন :