দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ৪ জুলাই: প্রথম প্রশ্ন, গর্ভবতী মহিলারা কি কোভিড ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন? হ্যাঁ, গর্ভবতী মহিলারাও এখন কোভিড ভ্যাক্সিন নিতে পারবেন। NTAGI র পরামর্শমত ভারতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার-কল্যাণ মন্ত্রক এই ব্যাপারে অবশেষে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে এসেছেন। উল্লেখ্য যে, কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনেশন প্রথমে বিশেষ শ্রেণীকে দিয়ে শুরু হয়ে ক্রমশঃ পরিব্যাপ্ত হয়েছে ১৮ বছরের উপরে থাকা সমস্ত জনসংখ্যাতে, যা কিনা আমাদের মোট জনসংখ্যার ৬৯% এরও বেশী এবং এই জনসংখ্যার প্রায় ৪৮% ই মহিলা। বিভিন্ন রিসার্চের মাধ্যমে এটুকু পরিষ্কার জানা গেছে যে, ভ্যাক্সিন নিলে মা ও তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের যতটা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তার চেয়ে ঢের বেশী ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে গর্ভবতী অবস্থায় মা কোভিড-আক্রান্ত হলে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে হওয়া রিসার্চ থেকে এটা পরিষ্কার, যে একজন গর্ভবতী নন এমন মহিলার থেকে একজন গর্ভবতী মহিলার কোভিড রোগ জটিলতর হওয়ার আশঙ্কা অনেকগুণ বেশী, এবং এই রোগের ফলে গর্ভস্থ ভ্রুণ বা শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকগুণে বেশী। সময়ের পূর্বে বা অপরিণত শিশুর প্রসব, বা সদ্যোজাত শিশুর বিপজ্জনকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া ইত্যাদি গভীর সমস্যাগুলির উদয় হতে পারে, এবং একজন গর্ভবতী মহিলার কোভিড_আক্রান্ত হয়ে ইন্টেনসিভ কেয়ারে ভর্তি হওয়ার হারও গর্ভবতী নয়, এমন মহিলার থেকে অনেকটাই বেশি।

thebengalpost.in
গর্ভবতী মহিলারাও নিতে পারবেন করোনা ভ্যাকসিন! প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে রাখুন

*তাহলে এখন কী করণীয়?*
গর্ভবতী মায়েরা কোভিড সংক্রমিত হলে কি সমস্যা আসতে পারে, সেগুলি সম্বন্ধে  তাঁদের অবগত করতে হবে কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে।
কাউন্সেলিং এর ধাপগুলি কি কি?
১) ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী মায়েদের বোঝাতে হবে।
২) স্বাস্থ্য/উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রাক-প্রসবকালীন “চেক-আপের” সময়, বা আউটরিচ ইমিউনাইজেশন সেশনের সময়, গ্রামীণ / নাগরিক স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকরণ দিবসের সময়ে আগত গর্ভবতী মায়েদের
৩) গর্ভবতী মায়েরা সাধারণ চিকিৎসা বা অন্য কোন উপলক্ষে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে
৪) অন্য কোন স্থানে, যেখানে গর্ভবতী মায়েদের সম্মুখীণ হতে হচ্ছে
৫) কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনেশন সেন্টারগুলিতে।
উপরিউল্লিখিত স্থানগুলিতে সম্মুখসারির কর্মীরা (Front line worker) অথবা টীকা প্রদানকারী কর্তৃক মায়েদের বা তাঁদের পরিবারের লোকেদের কোভিড ১৯ আক্রান্ত হলে গর্ভবতী মা ও শিশুর উপর তার কুপ্রভাব, ভ্যাক্সিনেশনের সুবিধাগুলি, এবং ভ্যাক্সিন নিলে কি কি সাবধানতা নিতে হবে সে সম্পর্কে তাঁদের সম্যক অবহিত করার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকবে।

*যদি গর্ভবতী মহিলাটি কাউন্সেলিং এর পর ভ্যাক্সিন নিতে রাজী হয়, তবে কী করণীয়?*
যদি তিনি রাজী থাকেন, তবে কোউইন অ্যাপে তাঁকে ভ্যাক্সিনের জন্য নথিবদ্ধকরণ থেকে নিকটস্থ কোথায় কবে ভ্যাক্সিন পেতে পারেন, এ সবই তাঁকে বা তাঁর বাড়ির লোককে বুঝিয়ে দিতে হবে।
*ভ্যাক্সিনেশনের পর গর্ভবতী মহিলাটির এ ই এফ আই সংক্রান্ত কি কি বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে?*
১) জেলার এ ই এফ আই কমিটিতে অবস্টেট্রিশিয়ান ও গায়নোকোলজিস্ট,
পেডিয়াট্রিশিয়ান বা নিওন্যাটোলজিস্ট রাখতে হইবে-যাঁরা গর্ভবতী মহিলাদের কারও ভ্যাক্সিনেশনের পর সিভিয়ার বা সিরিয়াস এ ই এফ আই হলে তার তদন্ত করে সঠিক কারণ অনুসন্ধান করতে পারবেন।
২) যদি ভ্যাক্সিনেশনের পর কোন গর্ভপাত হয়, তাহলে তার কোষভিত্তিক পর্যালোচনা (Cytopathological Examination) করা জরুরী।
৩) এই ধরণের কোন ঘটনা অবশ্যই তাঁদের এম সি এইচ/এ এন সি কার্ডে নথিভুক্ত করতে হবে।
৪) এক্ষেত্রে প্রাক-প্রসব বা প্রসব পরবর্ত্তী সমস্ত রেকর্ড ঐ গর্ভবতী মহিলাটির চিকিৎসকের থেকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
গর্ভবতী মহিলারা এখন থেকে “কোউইন অ্যাপে” নিজের নাম রেজিস্টার করতে পারবেন, অথবা বাড়ির কাছের কোন কোভিড ভ্যাক্সিনেশন সেন্টারে গিয়ে কোভিড ভ্যাক্সিনেশনের জন্য আবেদন রাখতে পারবেন । (এই বিষয়ে অপারেশনাল গাইডলাইন্সের কপি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে রাজ্যে রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।) সকলের সুবিধার্থে বিষয়টি সহজ বাংলায় অনুবাদ (অনুসৃজন) করেছেন নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (Dy CMOH 3) ডাঃ সুপ্রিয় মিত্র।

thebengalpost.in
গর্ভবতী মহিলারাও নিতে পারবেন করোনা ভ্যাকসিন! প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে রাখুন