দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুন: আরো নিম্নমুখী হল জেলার করোনা সংক্রমণ! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মঙ্গলবার সকালের রিপোর্ট অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন মাত্র ১৯৩ জন। গত ২২ শে এপ্রিলের পর এই প্রথম ২০০’র নীচে নামলো জেলার করোনা সংক্রমণ! ওই দিন জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন ১২১ জন। ২৩ শে এপ্রিলের পর থেকে ৩০০-৪০০-৫০০-৫৯৫ এভাবেই বেড়েছে সংক্রমণ (মাঝখানে শুধু ২৭ শে মে ইয়াশের কারণে কম পরীক্ষা হওয়ায় ১৭৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন)। গত ১ সপ্তাহ ধরে ফের ২০০’র ঘরে ঘোরাফেরা করা শুরু করেছিল দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ। সোমবার (৭ জুন) তা ১৯৩ এ নামলো! মঙ্গলবার (৮ জুন) জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে সেই রিপোর্ট পাওয়া গেছে। সোমবার ২১৪০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল, ১৯৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানা গেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে। সেই হিসেবে পজিটিভিটি রেট মাত্র ৯.০১ শতাংশ (অর্থাৎ, ১০০ টি নমুনার মধ্যে ৯ টি রিপোর্ট পজিটিভ)! অন্যদিকে, গত রবিবার ও সোমবারের রিপোর্ট অনুযায়ী (পরীক্ষা করা হয়েছে ১ দিন আগে) জেলায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন যথাক্রমে- ২৮২ জন ও ২০৩ জন। গত ৩ দিনে মোট সংক্রমিত হয়েছেন- ৬৭৮ জন। গত ৭২ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার করোনা হাসপাতাল গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জন কিংবা তার থেকেও বেশি জনের। এখনও পর্যন্ত জেলায় মৃত্যুর হার ১.৪১ শতাংশ। সংক্রমণের হার কমলেও মৃত্যুর হার যে এখনও কমেনি তা বলাই বাহুল্য! জেলায় সুস্থতার হার ৯১.৫৪ শতাংশ। এই মুহূর্তে জেলায় সক্রিয় বা চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হল- ২৬১৪। এর মধ্যে করোনা হাসপাতালে ভর্তি আছেন মাত্র ২৬৩ জন। সেফ হোমে ১১ জন। বাকি ২৩৪০ জনই আছেন গৃহ নিভৃতবাস বা হোম আইশোলেশনে। তবে, এর মধ্য থেকে অনেকেই অবশ্য বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন আছেন। সবমিলিয়ে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতা যে অনেকখানি কমেছে তা বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন এই সময়ে আরও সতর্কতা প্রয়োজন, তৃতীয় বা পরবর্তী ঢেউ রুখে দেওয়ার জন্য!
এদিকে, গত ৩ দিনের রিপোর্ট অনুযায়ী (রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার) জেলা শহর মেদিনীপুর সহ সর্বত্র কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। ৬ ই জুন অর্থাৎ রবিবার সকালের রিপোর্ট (টেস্ট হয়েছে ৫ ই জুন) অনুযায়ী, মেদিনীপুর শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় (সদর ব্লক) করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৬০ জন। খড়্গপুরে ৭৯ (আইআইটি ৪, শহর ৪১, গ্রামীণ ১৯, রেল ১৫) জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। শালবনীতে ৯ (বিআরবি ১, পিড়াকাটা ১, শালবনী ৭) জন, বেলদায় ১৪ জন, দাঁতনে ৭ জন, কেশিয়াড়িতে ৭ জন, কেশপুরে ৪ জন, গড়বেতায় ১৫ জন, ডেবরায় ১০ জন, সবংয়ে ১২ জন এবং পিংলায় ৯ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। অন্যদিকে, ঘাটাল মহকুমায় ৫২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে রবিবার। ওই দিন ২৮২ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন জেলায়। ৭ ই জুন অর্থাৎ সোমবার সকালের রিপোর্ট (টেস্ট হয়েছে ৬ ই জুন) অনুযায়ী, মেদিনীপুরে ৩৯ জন, খড়্গপুরে ৪০ (গ্রামীণ ১১, শহর ২৮, রেল ১) জন, ডেবরায় ৫ জন, সবংয়ে ৭ জন, পিংলায় ৯ জন, কেশপুরে ৭ জন, কেশিয়াড়িতে ২ জন, দাঁতনে ৫ জন, বেলদায় ১০ জন, গড়বেতায় ২২ জন ও শালবনীতে ৩ (পোড়াডিহা ২, তিলাখুলি ১) জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। সোমবার ঘাটাল মহকুমায় ৩৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। জেলায় মোট ২০৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন সোমবার। অপরদিকে, মঙ্গলবার সকালের রিপোর্ট অনুযায়ী (টেস্ট হয়েছে ৭ ই জুন, সোমবার), গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১৯৩ জন। এর মধ্যে- মেদিনীপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ৩৮ জন এবং খড়্গপুরে ৪৩ (শহর ১৬, গ্রামীণ ১১, আইআইটি ৫, রেল ১১) জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শালবনীতে ৮ (গোদাপিয়াশাল ৩, শালবনী ২, গোবরু ১, জামডহরা ১, বিআরবি ১) জন, গড়বেতায় ১২ জন, সবংয়ে ৭ জন, ডেবরায় ৮ জন, পিংলায় ৩ জন, কেশপুরে ৩ জন, কেশিয়াড়িতে ২ জন, দাঁতনে ৭ জন এবং বেলদা-নারায়ণগড় এলাকায় ৯ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ঘাটাল মহকুমায় ৪১ জনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।