দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ জানুয়ারি: সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে! এখনও অবধি নিশ্চিন্তি এটুকুই যে, বেশিরভাগ রোগীই স্বল্প উপসর্গযুক্ত কিংবা সাধারণ জ্বর-সর্দি-মাথাব্যথার উপসর্গ, যা বাড়িতেই সেরে যাচ্ছে। লাগছেনা অক্সিজেন কিংবা ভর্তি হতে হচ্ছে না হাসপাতালে। তবে, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তা উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের চরম সময়েও এই হারে সংক্রমণ বাড়েনি বলে মনে করছেন দেশের সকল চিকিৎসকরা। অনেক বিশেষজ্ঞ আবার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, ভয়াবহ হারে সংক্রমণ বাড়ছে, ফলে এই ভ্যারিয়েন্টও যেকোনো সময় রূপ বদলে বিপজ্জনক হতে পারে। এই মুহূর্তে জটিল উপসর্গ দেখা না দিলেও, বয়স্ক এবং কো-মর্বিডিটি থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যেকোনো মুহূর্তে দেখা দিতে পারে জটিল উপসর্গ। তাই, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকাই শ্রেয়! অন্য একদল অবশ্য আশা প্রকাশ করছেন, এই ওমিক্রণ ভ্যারিয়েন্টের মধ্য দিয়েই করোনা বিদায় নিতে পারে। তবে, তার আগে সংক্রমণ চরম শিখরে পৌঁছে যাবে। ফলে, মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে, আরও কড়া বিধিনিষেধের বার্তা দিয়েছেন। ‘অরণ্য শহর’ ঝাড়গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গাতে অঘোষিত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে ইতিমধ্যে! এর মধ্যেই, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সারা দেশে সংক্রমণের গন্ডী পেরিয়েছে এক লাখ। ১ লক্ষ ১৭ হাজার ১০০ সংক্রমিত এবং ৩০২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত চব্বিশ ঘণ্টায়। সুস্থ হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৩৬ জন। অপরদিকে, রাজ্যে গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ২১৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।‌ সুস্থ হয়েছেন ৭৯১২ জন। রাজ্যের মধ্যে, কলকাতা ও উত্তর চব্বিশ পরগনার অবস্থা আশঙ্কাজনক! তবে, অন্যান্য জেলাগুলিতেও বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে সংক্রমণ।

thebengalpost.net
রাজ্যের বুলেটিন :

গত চব্বিশ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ২৮৭ জন। আগের দিন সংক্রমিত হয়েছিলেন ২০৪ জন। গত ৪৮ ঘন্টায় মৃত্যু হয়নি বলে জানা গেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও ঘাটাল মহাকুমা হাসপাতাল মিলিয়ে এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি আছে মাত্র ১৬ জন। ডেবরা ও শালবনীতে এখনও রোগী ভর্তি হয়নি। অপরদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মধ্যে সংক্রমণে শীর্ষে মেদিনীপুর ও খড়্গপুর। তারপরই আছে, ঘাটাল, দাসপুর, শালবনী, ডেবরা, গড়বেতা, বেলদা, দাঁতন, সবং, চন্দ্রকোনা, কেশিয়াড়ি প্রভৃতি এলাকা। প্রতিটি ব্লকের একাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সংক্রমিত হয়েছেন ইতিমধ্যে। ঘাটাল, খড়্গপুর, মেদিনীপুরের পর বেলদা, নারায়ণগড়, দাঁতন, কেশপুর সর্বত্র স্বাস্থ্য আধিকারিক, চিকিৎসক ও নার্সরা সংক্রমিত হয়েছেন গত ৪৮ ঘন্টায়। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মেদিনীপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ৯৪ (আগের দিন ছিল ৪৮) এবং রেল, আইআইটি সহ খড়্গপুরে ৭৮ (আগেরদিন ছিল ৯০) জন সংক্রমিত হয়েছেন। দুই শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ। অন্যদিকে, গত দু’দিনে ঘাটাল মহাকুমায় প্রায় ৫০ জন, ডেবরায় প্রায় ২৫ জন, শালবনীতে বিআরবি (টাঁকশাল) বাদ দিয়েই দু’দিনে ২০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়াও, গড়বেতা, সবং, বেলদা, কেশিয়াড়ি, দাঁতন প্রভৃতি এলাকাতেও ১০-১২ জন করে সংক্রমিত হয়েছেন।

thebengalpost.net
শালবনী করোনা হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে :