মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ জুন: না, এটা নিছকই কোন “সেফ হোম” ছিলনা! ছিল, সম্প্রীতি-মানবতা-সেবা ও শুশ্রূষা’র এক স্বতন্ত্র পীঠস্থান। গত ১২ ই মে জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের সহযোগিতায় পথচলা শুরু করেছিল, খড়্গপুর কলেজের অব্যবহৃত ছাত্রী নিবাসে তৈরি হওয়া বেসরকারি ‘সেফ হোম”। অক্সিজেন ও ২৪ ঘন্টার চিকিৎসা পরিষেবা সহ গত ১ মাসে ৮০ জনের চিকিৎসা হয়েছে এই সেফ হোমে। এই মুহূর্তে ১৩ জন চিকিৎসাধীন আছেন। ৪৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ২০ জনকে প্রয়োজন অনুযায়ী রেফার করা হয়েছে জেলার সরকারি করোনা হাসপাতালে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এমনটাই জানিয়েছেন, এই সেফ হোমের দায়িত্বে থাকা ১২ টি সমাজসেবী ও ধর্মীয় সংগঠনের অন্যতম সেন্ট জোনস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের অসীম নাথ। আর, এই সাফল্য ও গর্বের পথচলার ১ মাস পূর্ণ হওয়াতেই সেফ হোমের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসাধীন রোগীদের নিয়ে খুশিতে মেতে উঠলেন তাঁরা। যোগ দিলেন এই পরিষেবার অন্যতম কাণ্ডারী খড়্গপুরের মহাকুমাশাসক আজমল হোসেন। সকলকে নিয়ে এক গর্বিত অভিভাবকের মতোই “কোভিড বিধি” মেনে কেক কেটে সাফল্য উদযাপন করলেন মহকুমাশাসক। তিনি তুলে ধরলেন, ১২ টি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন ছাড়াও ৯ জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স, ৩ জন ওয়ার্ড বয়, ৩ জন সাফাই কর্মী এবং ২ জন অ্যাম্বল্যান্স চালকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিক ভূমিকার কথা।

thebengalpost.in
সকলের সঙ্গে মহকুমাশাসক আজমল হোসেন :

প্রসঙ্গত, খড়্গপুর শহরের ১২ টি ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের সংগঠন এগিয়ে এসেছিল অক্সিজেন পরিষেবা যুক্ত একটি বেসরকারি “সেফ হোম” গড়ে তুলতে। ১২ টি সংগঠনের মধ্যে যেমন ছিল কয়েকটি ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, তেমনই ছিল হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। সেন্ট জোনস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সহ উল্লেখযোগ্য সংগঠনগুলি ছিল- গরীব নওয়াজ ফাউন্ডেশন, বালাজী মন্দির কমিটি, সিদ্ধি বিনায়ক সেবা মণ্ডল, সিধু কানু ফাউন্ডেশন,‌ খড়্গপুর প্রয়াস, লাইফ ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল প্রভৃতি। এককথায় সর্ব ধর্ম-বর্ণের মেলবন্ধনেই গড়ে উঠেছিল এই সেফ হোম। এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, মেদিনীপুর শহরের প্রসিদ্ধ চিকিৎসক (গাইনোকোলজিস্ট) ডাঃ মঙ্গল প্রসাদ মল্লিক, ডাঃ অরূপ মণ্ডল, ডাঃ শুভম চন্দ্র, ডাঃ নীলাঞ্জনা চন্দ্র, ডাঃ অভিষেক দাস প্রমুখ। শুক্রবারের উদযাপনে মহকুমাশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ডাঃ শুভম চন্দ্র এবং ডাঃ অভিষেক দাস। সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “অতিমারীর সময়ে যেভাবে চিকিৎসক ও সমাজসেবী ওই সংগঠনগুলি এগিয়ে এসেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাঁদের আরও সাফল্য কামনা করি।”

thebengalpost.in
সাফল্যের ১ মাস উদযাপন :