দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: অতিমারী’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও করোনা-সংক্রমণের ভয়াবহ ঢেউয়ের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে জেলা প্রশাসন তথা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সাথে সাথেই তৎপর জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বণিক সংগঠনগুলি। জেলার করোনা যুদ্ধে এবার সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনন্য সাক্ষর রাখলো- পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সংক্ষেপে- PMDCCI)। জেলার এই বণিক সংগঠন করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংকটজনক মুহূর্তে “রামগোপাল আগরওয়ালা অক্সিজেন ব্যাঙ্ক” তৈরি করে সমাজ সেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইতিমধ্যে। আর, এবার ২০ শয্যার চ্যারিটেবল কোভিড কেয়ার সেন্টার বা “সেফ হোম” (আইসোলেশন সেন্টার) নির্মাণ করে “জীবন বাঁচানোর” এই লড়াইয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার সাক্ষ্য রাখলো। দিনকয়েক আগে থেকেই শুরু হয়ে যাওয়া PMDCCI এর “সেফ হোম” পরিষেবার উদ্বোধন হল বুধবার বিকেলে।

thebengalpost.in
সেফ হোমের উদ্বোধনে স্বাস্থ্য কর্তারা :

thebengalpost.in
চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্তরা খুশি পরিষেবায় :

পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর উদ্যোগে মেদিনীপুরের “শ্যাম সঙ্ঘ” ভবনে শুরু হয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, উন্নত মানের সেফ হোম পরিষেবা। এই মুহূর্তে, ১৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন। বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বুধবার বিকেলে PMDCCI এর এই ‘চ্যারিটেবল কোভিড কেয়ার সেন্টার’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা তথা ও.এস.ডি ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী। উপস্থিত ছিলেন, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিমাই চন্দ্র মন্ডল, পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি উদয়রঞ্জন পাল, সাধারণ সম্পাদক চন্দন বসু, প্রাক্তন বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী, সহকারী কোষাধ্যক্ষ মৃণাল কান্তি বারিক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। কিছুক্ষণের জন্য ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন বসু জানান, “সামাজিক দায়বদ্ধতার তাগিদেই আমরা এই কাজে ব্রতী হয়েছি। এই সেফ হোমে স্বল্প উপসর্গযুক্ত করোনা পজিটিভ রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাঁদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা এবং সুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া, রোগীদের অক্সিজেন পরিষেবা, নিরামিষ খাবার দেওয়া এবং ২৪ ঘন্টা ডাক্তার ও নার্সের পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সঠিক পরিষেবার মাধ্যমে করোনা রোগীরা সুস্থ‌ও হয়ে উঠছেন।” তবে, চন্দন বাবু ‘শ্যাম সংঘ’ কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, বিনামূল্যে তাঁদের ভবনটি ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য। এদিকে, পিএমডিসিসিআই (PMDCCI) এর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিমাই চন্দ্র মন্ডল। ডাঃ সারেঙ্গী জানিয়েছেন, “জেলায় এখনও এরকম অনেক পরিবার আছে, যাদের পক্ষে করোনা আক্রান্তের জন্য প্রয়োজনীয় আইসোলেশন বা পৃথক ঘর ও বাথরুমের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়না; তাঁদের জন্য বণিক সভার এই উদ্যোগ অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে পিএমডিসিসিআই’কে ধন্যবাদ জানাই অতিমারীর এই পরিস্থিতিতে, সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে আন্তরিক ভাবে এগিয়ে আসার জন্য। এভাবেই, অতিমারী-যুদ্ধে সকলের প্রচেষ্টায় জয় হবে নিশ্চয়, করোনা হারবে মানুষ জিতবে।”

thebengalpost.in
শ্যাম সঙ্ঘে উদ্বোধন হল :

thebengalpost.in
২০ শয্যার সেফ হোম উদ্বোধন :