thebengalpost.net
সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন জেলা পুলিশ সুপার:

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ আগস্ট: ‘জেলা শহর’ মেদিনীপুর এবং ‘রেল শহর’ খড়্গপুরের সংযোগস্থলে কংসাবতী নদীর উপর বীরেন্দ্র সেতুর সংস্কার শেষে লোড টেস্টের জন্য সমস্ত ধরনের যানবাহন চলাচল (বাইক, সাইকেল সহ) এবং পথচারীদের যাতায়াত (হেঁটেও পারাপার করা যাবে না) সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে টানা ৯৬ ঘন্টা। ১৭ আগস্ট রাত্রি ১১-টা থেকে ২১ আগস্ট রাত্রি ১১-টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে। মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল অ্যাম্বুলেন্স সহ জরুরী পরিষেবার ক্ষেত্রেও কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না। তবে, আজ, বুধবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন, “আমরা জরুরি পরিষেবার মধ্যে শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স (এবং, চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যানবাহন)-কে ছাড় দেওয়ার কথা ভেবেছি। তবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে মোটরসাইকেল বা বাইককে ছাড় দেওয়া যায় কিনা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।” তাঁর সংযোজন, “প্রথম দু’দিন (শুক্রবার ও শনিবার) পথচারীদের ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তারপর, পরিস্থিতি দেখে পথচারীদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা জুড়ে একাধিক (১৩টি) নাকা চেকিং পয়েন্ট করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মধ্যে জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই চার দিন নদীপথ ও রেলপথের উপর নির্ভর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সহযোগিতাও প্রার্থনা করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার এবং জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী।

thebengalpost.net
সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন জেলা পুলিশ সুপার:

বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা জানান, “একটা বড় কাজের জন্য জেলাবাসীর সাহায্য প্রয়োজন। বীরেন্দ্র সেতু সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। এবার লোড টেস্টের জন্য ৯৬ ঘন্টা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত ওই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যাতে ঘুর পথে (বা ট্রেনে) যাত্রীরা নিজেদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারেন, সেজন্যই সকলকে অবগত করা হচ্ছে। এজন্য, আমরা সকলের সাহায্য প্রার্থনা করছি।” অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্যান্য জরুরি পরিষেবার গাড়ি এবং সাধারণ যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ির জন্য মেদিনীপুর শহর থেকে ধর্মা (মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন), কেশপুর, লঙ্কাগড়, রাজনগর, বকুলতলা, খুকুড়দহ, মেছোগ্রাম দিয়ে জাতীয় সড়ক ধরার কথা বলা হয়েছে জেলা পুলিশের তরফে। কলকাতা থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও এই একই পথ ধরার কথা বলা হয়েছে। তবে, খড়্গপুর থেকে যথারীতি চৌরঙ্গী হয়ে কলকাতা যাওয়া যাবে। এছাড়াও, শালবনী, চন্দ্রকোনা রোড থেকে সড়ক পথে কলকাতা যেতে গেলে, ঘাটাল-দাসপুর হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, টানা কয়েক মাস ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরের সংযোগস্থলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘দেশপ্রাণ বীরেন্দ্র সেতু’ বা মোহনপুর ব্রিজ সংস্কারের কাজ চলেছে। সেই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এবার তাই, জাতীয় সড়কের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ‘লোড টেস্টিং’ (ভার পরীক্ষা) করে নিতে চায়। এজন্য, সেতু’র উপর যাতায়াত বা চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রেখে কাজটি সম্পন্ন করার আবেদন জানানো হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে। জেলা প্রশাসনের তরফে ছাড়পত্র মেলার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী ১৭ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত্রি ১১টা থেকে ২১ আগস্ট (সোমবার) রাত্রি ১১টা পর্যন্ত বীরেন্দ্র সেতু বা মোহনপুর ব্রিজের উপর যান চলাচল এবং পথচারীদের যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হবে। তবে, বুধবার (১৬ আগস্ট) সাংবাদিক বৈঠক করে অ্যাম্বুলেন্স-কে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে জেলা পুলিশ সুপারের তরফে।

thebengalpost.net
চারদিন জাতীয় সড়কের ওপর বীরেন্দ্র সেতুতে যান চলাচল (অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া) পুরোপুরি বন্ধ থাকবে: