দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৫ নভেম্বর: কলাইকুন্ডা বায়ু সেনা ঘাঁটি (Kalaikunda Air Force Station)’কেই কাজে লাগিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গড়ে উঠতে পারে অসামরিক বিমানবন্দর (Airport)। খড়্গপুর গ্রামীণে অবস্থিত কলাইকুন্ডা সামরিক বিমানঘাঁটিতেই বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে অসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে, সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে ‘অসামরিক বিমান চলাচল সেল’ থেকে একটি চিঠি এসেছে। এই সেল রাজ্যের পরিবহণ দফতরের অধীনে রয়েছে। কলাইকুন্ডায় বিমানবন্দরের পরিকাঠামো তৈরির জন্য ঠিক কত জমি প্রয়োজন, ইতিমধ্যে তা সমীক্ষা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই চিঠি আসার পরে সংশ্লিষ্ট জমির মাপজোক করাও হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলার ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি ওই এলাকা পরিদর্শনে যান প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরিদর্শন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি।

thebengalpost.net
বায়ু সেনা ঘাঁটিকেই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও প্রস্তাবিত বিমানবন্দর প্রকল্প নিয়ে কলাইকুন্ডায় পরিদর্শন হয়েছে। পরিদর্শনে এসেছে ‘মাল্টি- ডিসিপ্লিনারি টিম’। এই দলে যেমন ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (Airport Authority of India)র প্রতিনিধি ছিলেন, তেমন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। AAI- এর সঙ্গে রাজ্যের ভিডিয়ো বৈঠকও হয়েছে। এমনিতেই, ‘মিনি ইন্ডিয়া’ রূপে খ্যাত খড়্গপুর বিভিন্ন কারণেই গুরুত্বপূর্ণ শহর। রেলশহর খড়্গপুরে আছে দেশের অন্যতম বৃহৎ জংশন। রয়েছে আইআইটি (IIT)। গড়ে উঠেছে শিল্পতালুক। অন্যতম এই বাণিজ্য শহরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের বসবাস। স্বভাবতই, এখানে বিমানবন্দর চালু হলে খড়্গপুর সহ সমগ্র অবিভক্ত মেদিনীপুরের গুরুত্ব যে আরও বৃদ্ধি পাবে তা বলাই বাহুল্য! তাছাড়া, কলাইকুন্ডার বিশাল এলাকা জুড়ে সামরিক বিমানঘাঁটি থাকায়, এর অন্য প্রান্তে অসামরিক বিমানবন্দর গড়ে তুলতে সুবিধা হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রের ‘রিজিওনাল কানেক্টটিভিটি স্কিম’ (RCS)-এ জুড়েছে খড়্গপুরের কলাইকুন্ডা। ছোট শহরগুলির মধ্যে বিমান যোগাযোগ বাড়াতেই এই প্রকল্প। সব দিক খতিয়ে দেখা গেছে, আরসিএস-অপারেশন শুরু করতে কলাইকুন্ডায় (বিমানবন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য) প্রয়োজন মোট ৩৮.২৫ একর জমি। তাছাড়া, বিমানবন্দর চালু করতে হলে আগে টার্মিনাল (Airport Terminal) গড়তে হবে। বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, কলাইকুন্ডা সামরিক বিমানঘাঁটিতে বড় রানওয়ে রয়েছে। দূরত্ব প্রায় ২.৭ কিলোমিটার। অনুমান, এই রানওয়ের একাংশ অসামরিক বিমান চলাচলে ব্যবহার হতে পারে।

thebengalpost.net
কলাইকুন্ডা সামরিক বিমানঘাঁটি চত্বরেই গড়ে উঠতে পারে অসামরিক বিমানবন্দর :

এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, কলাইকুন্ডা বর্তমানে সামরিক বিমানঘাঁটি। এখানে মাঝেমধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া হয়। ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের অ্যাডভান্স ট্রেনিংও হয় এখানে। অবসরপ্রাপ্ত এক সামরিক কর্তা জানাচ্ছেন, বায়ুসেনার পাইলটরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সামরিক কৌশল কলাইকুন্ডা বিমানঘাঁটিতেই শেখেন। কলাইকুন্ডার প্রশিক্ষণে পাস হওয়ার পরেই একজন পাইলট ফাইটার স্কোয়াড্রনে জায়গা পান! স্বভাবতই, এখানে বিশাল এলাকাজুড়ে এয়ারবেস এবং টার্মিনাল আছে। তা কাজে লাগিয়েই বিমানবন্দর গড়ে তোলা হতে পারে! খতিয়ে দেখা হচ্ছে, নিরাপত্তার দিকটিও। যদিও, এই বিষয়ে জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল সহ জেলাপ্রশাসনের আধিকারিকরা এখনই কিছু প্রকাশ করতে চাননি, তবে সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এই বিষয়ে স্বীকার করেছেন যে, “কলাইকুন্ডা এলাকা পরিদর্শন হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে।”