দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন নিউ দিল্লি, ৭ জুন: দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহ আক্রমণ, পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং বাংলার ভোটে ব্যাপক পরাজয়— এসব কিছু নিয়েই রীতিমতো ব্যাকফুটে ছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে, সোমবার বিকেল ৫ টা থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন ১৩০ কোটি ভারতবাসী। আপাততো, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ নিরাশ করলোনা তাঁদের। ২১ শে জুন থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিনেশন, শিশুদের ভ্যাকসিনেশন ট্রায়াল, আরও দুটি ভ্যাকসিন উৎপাদনে ছাড়পত্র এবং নভেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন এই সবকিছু বার্তার মধ্য দিয়ে যেন ‘কল্পতরু’ হয়ে উঠলো কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ২১ জুন থেকে ১৮ ঊর্ধ্ব সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের হাতে থাকা ২৫ শতাংশ দায়িত্বও নেবে কেন্দ্র, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর। ৪৫ ঊর্ধ্বদের মতোই ভ্যাকসিন কিনে রাজ্যকে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। মোট উৎপাদনের ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিন কিনতে পারবে বেসরকারি হাসপাতাল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, “তবে যে ব্যক্তি ফ্রি ভ্যাকসিন নিতে চান না, সেই ব্যবস্থাও জারি থাকবে। এক ডোজের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি।” জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “করোনায় অনেকে নিজের পরিজনদের হারিয়েছেন। সেই পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই। গত ১০০ বছরে এতবড় মহামারী দেখেনি আধুনিক বিশ্ব!” তিনি এও জানিয়েছেন, “ভ্যাকসিন হল আমাদের সুরক্ষা কবচ। সারা বিশ্বে যতটা পরিমাণ ভ্যাকসিন দরকার, তার তুলনায় অনেক কম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা। আগে বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন আসতে বহু সময় লেগে যেত। আগে, পোলিও, স্মল পক্স, হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন পেতে বহু দেরী হয়েছে। এখন আমাদের দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদিত হচ্ছে। ভারতে আগে ভ্যাকসিনেশন হত মাত্র ৬০ শতাংশের। ১০০ শতাংশ টিকাকরণে ৪০ বছর লেগে যায়। কিন্তু, এতবড় মহামারীর মধ্যেও ভারতে টিকাকরণের মাত্রা বিশ্বের অনেক দেশের থেকে অনেক বেশি।”
অপরদিকে, ২০২০ সালে করোনার জন্য যখন লকডাউন লাগু হয়েছিল, সেইসময় প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা চালু হয়েছিল। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও সেই প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা জুন পর্যন্ত লাগু ছিল। এবার, নভেম্বর অর্থাৎ দীপাবলি পর্যন্ত চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বার্তা দেন, “কেউ খালি পেটে থাকবে না। দেশ থেকে করোনা চলে যায়নি, সাবধানে থাকুন, মানুন কোভিড প্রোটোকল।”