সুনীল দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ আগস্ট: এ জনমে একবার অন্তত ভূ-স্বর্গ দর্শনের বাসনা কার না থাকে! তবে, স্বপ্ন বা সাধ থাকলেও, অনেকসময় সাধ্যে কুলোয়না। ঠিক একইভাবে আন্দামানের অ্যাডভেঞ্চার উপভোগ করারও ইচ্ছে পোষণ করেন বাঙালি। আর সেই সকল বাঙালি তথা মেদিনীপুর বাসীকেই এবার স্বল্প খরচে কাশ্মীরের স্বর্গীয় অনুভূতি আর আন্দামানের অসীম সৌন্দর্য প্রদান করতে উদ্যোগী হয়েছেন একদল উদ্যোগপতি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলা শহর মেদিনীপুর ও রেল‌ শহর খড়্গপুরের উপকন্ঠে কংসাবতী নদী তীরবর্তী তিন একর জায়গায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে তাই‌ গড়ে তোলা হয়েছে “কংসাবতী এগ্রি অ্যাডভেঞ্চার।” এই মুহূর্তে ব্যাটারিচালিত একটি বড় শিকারা এবং পালবাহী সাতটি শিকারা নিয়েই ‘কংসাবতী নদী’র উপর পথ চলা শুরু হয়েছে। কাশ্মীরের ডাল লেকের মতোই ছোট বড় শিকারাতে চেপে পর্যটকরা কংসাবতী বা কাঁসাই নদীর মাঝে গড়ে ওঠা তিনটি দ্বীপ যেমন পরিদর্শন করতে পারবেন, তেমনি থাকছে এই সকল দ্বীপে গিয়ে রান্নাবান্না এবং বনভোজনের আনন্দ নেওয়ার ব্যবস্থাও। এছাড়াও, কংসাবতীর এক প্রান্তে পরিযায়ী পাখিদের দেখার সাধও মিলবে এই শিকারাতে।

উল্লেখ্য যে, মেদিনীপুর-খড়্গপুর সংলগ্ন গোকুলপুর এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে “এগ্রি অ্যাডভেঞ্চার পার্ক।” শুধু জেলা নয়, জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য এবং দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য ঝুমুর গান, কবিগান, ছৌ নাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাও থাকছে। এর পাশাপাশি, হরিদ্বার ও বারাণসীর আদলে নদীর তীরে সন্ধ্যারতি দেবেন স্থানীয়রা। মূলত, এলাকার, বিশেষ করে খড়গপুর ও মেদিনীপুরের প্রায় ২০০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠতে চলেছে এই শিকারা পয়েন্ট। এছাড়াও, এই উদ্যোগ ঘিরে কর্মসংস্থান হবে এলাকার কয়েকশো যুবকেরও। উদ্যোক্তাদের মতে অক্টোবর অর্থাৎ পুজোর মাস থেকেই পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে এই অ্যাডভেঞ্চার।

thebengalpost.net
শিকারা :

অ্যাডভেঞ্চারের অন্যতম উদ্যোগী অমর প্রসাদ পাত্র বলেন, এমনিতেই দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে কংসাবতী নদী। তাই, এই নদীকেই কজে লাগিয়ে এলাকাবাসী তথা জেলাবাসীকে আমরা কাশ্মীর এবং আন্দামানের স্বাদ দিতে উদ্যোগী হয়েছি। প্রায় তিন একর জায়গা জুড়েই আমরা এই শিকারার ব্যবস্থা করব। শুধু তাই নয়, বিপ্লবীদের শহর মেদিনীপুরের প্রাচীন ইতিহাস তুলে ধরবো আমরা এই অ্যাডভেঞ্চারে। এলাকার ২০০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আমরা এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করব। সঙ্গে দ্বীপগুলোতে যাতে ফায়ার ক্যাম্প ও বনভোজনের স্বাদ নিতে পারেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা সেই ব্যবস্থাও করব। তবে, ১০ কোটি টাকা দিয়ে আমাদের পথ চলা শুরু হলেও, আমাদের এই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ১০০ কোটিতে গিয়ে পৌঁছবে বলেই ধারণা।”

thebengalpost.net
কংসাবতী নদীতে অভিনব উদ্যোগ: