দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, বীরভূম, ১৬ আগস্ট: পেঁয়াজের খোসার মতো একের পর এক দুর্নীতির রহস্য উদ্ধার হচ্ছে প্রতিমুহূর্তে! কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, রাইস মিল, বি.এড কলেজ, বেসরকারি কোম্পানির পর এবার নতুন এক ‘কেলেঙ্কারি’ ফাঁস হল অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। মঙ্গলবার-ই জানা গেছে, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১২ সালেই কোনো এক ‘অদৃশ্য ক্ষমতাবলে’ বোলপুরে বাড়ির অদূরেই কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (Kalikapur Primary School) শিক্ষিকা (Teacher) হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন অনুব্রত-কন্যা (Daughter of Anubrata Mandal) সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)। কিন্তু, কষ্ট করে স্কুলে যাননি কোনদিনই। বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা বলে কথা! খুব প্রয়োজন ছাড়া সুকন্যা মণ্ডল যে স্কুলে যেতেন না তা মানছেন এলাকাবাসী। তার বদলে, অ্যাটেনডেন্স লিস্ট বা হাজিরা খাতা পৌঁছে যেত অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে! সূত্রের খবর অনুযায়ী, অনুব্রত কন্যা সুকন্যা নাকি বাবার রাইস মিলের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। একটা সময় রটিয়ে দেওয়া হয়, সুকন্যা মণ্ডল চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন! যদিও তা অস্বীকার করেছেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক।

thebengalpost.net
অনুব্রত আর তাঁর সুকন্যা:

স্বাভাবিকভাবেই, গত দশ বছর ধরে স্কুলে না গিয়েই বেতন নেওয়ার মতো মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে সুকন্যা’র বিরুদ্ধে! বাবা’র গ্রেফতারির পর তাই আরও একবার নিজের চাকরি থেকে ইস্তফার খবর রটিয়ে দেন সুকন্যা। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে, সেই খবর যে ভিত্তিহীন তা জানিয়েছেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক। তিনি ফোনে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমার কাছে তেমন কোনো কাগজ আসেনি। তবে, এক-দেড় মাস আগে ছুটির আবেদন করা হয়েছিল বলে জানি!” এর বেশি কিছু তিনি বলতে না চাইলেও, এলাকার প্রবীণ এক সিপিআইএম নেতা জানিয়েছেন, “যার ভয়ে বীরভূমে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, যার বাড়িতে গিয়ে হাজিরা দিতে হতো জেলাশাসক-পুলিশ সুপারকে; তাঁর মেয়ে যে স্কুলে না গিয়েই বেতন পাবেন, তা নিয়ে আমরা অন্তত অবাক নই! যেখানে অন্যায়টাই নিয়ম, সেখানে অনুব্রত কন্যার স্কুলে যাওয়ার পরিবর্তে যে হাজিরা খাতাই তাঁর বাড়িতে যাবে সেটাই স্বাভাবিক।” এদিকে, স্কুলের বর্তমান শিক্ষকরা সুকন্যার বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে, কিছু বলা যাবে না!

thebengalpost.net
কালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়: